বর্তমানে বোরো উৎপাদন ভালো হওয়ায় দেশের বাজারে চালের সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে। এতে বিশ্ববাজার থেকে পণ্যটি আমদানির চাহিদাও কমেছে। ফলে এর প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে। গত কয়েক সপ্তাহে চালের মূল্য কমছে ভিয়েতনাম এবং থাইল্যান্ডের বাজারে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে ভারতের চালের বাজার।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর বোরো উৎপাদন হয়েছে ২ কোটি ৩ লাখ টন। গেল বছর চালের দেশীয় উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ৮৭ লাখ টন। এ বছর চার কোটি টন উৎপাদনের লক্ষ্য ছোঁয়ার কথা বলা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চালের মূল্যে হ্রাস-বৃদ্ধি উভয় ক্ষেত্রেই অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে বাংলাদেশসহ অন্য দেশগুলোর আমদানি প্রবণতা। ফসল কম উৎপাদনের কারণে যখন বাংলাদেশকে চাল আমদানি করতে হয় তখন আন্তর্জাতিক বাজারে চালের মূল্য বাড়াতে থাকে। আবার যখন বাংলাদেশে বাম্পার ফলন কিংবা আমদানিতে নিষাধাজ্ঞা থাকে তখন চালের আন্তর্জাতিক বাজার থাকে নিম্নমুখী।
বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ চাল রফতানিকারক দেশ থাইল্যান্ডের বাজারে গত তিন সপ্তাহ ধরেই ভাঙা চালের মূল্য কমতির দিকে। দেশটির বাজারে গত সপ্তাহে রফতানিযোগ্য ৫ শতাংশ ভাঙা চালের টনপ্রতি মূল্য ৪৮৭-৫১০ ডলার থাকলেও বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৮০-৫৪৫ ডলার।
অপরদিকে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ চাল রফতানিকারক দেশ ভিয়েতনামেও খাদ্যপণ্যটির মূল্যও কমতির দিকে। দেশটির বাজারে রফতানিযোগ্য ৫ শতাংশ ভাঙা চালের টনপ্রতি মূল্য ৪৯০-৪৯৫ ডলার থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৪৮৫-৪৯০ ডলারে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাল আমদানির ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে দেশে বর্তমানে চালের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। প্রায় ১২ লাখ টন চাল মজুদ রয়েছে বলে জানান তারা।
এ ব্যাপারে সাবেক খাদ্য সচিব আবদুল লতিফ মন্ডল বলেন,চলতি বছর কিছু চাল আমদানি করা লাগবে। তবে সেটি অবশ্যই প্রয়োজনীয়তার নিরিখে। সেই সাথে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও শুল্ক সুবিধা দিয়ে চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে। তবে অবশ্যই নির্দিষ্ট পরিমাণ চালের অতিরিক্ত আমদানি যাতে না হয় সেজন্য কঠিন শর্ত বেঁধে দিতে হবে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করলে চালের মূল্য কিছুটা বাড়তে পারে। তবে সেটি খুব বেশি হবে না।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে