পার্বত্য চট্টগ্রামের অপরূপ সৌন্দের্য্য দেশী-বিদেশী পর্যটকরা চিরমুগ্ধ। কেননা প্রকৃতি যেনো এখানে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে সবটা উজাড় করেই। পার্বত্য চট্টগ্রামের বন, পাহাড়, ঝিরি-ঝর্ণা যেকোনো ভ্রমণপিপাসু পর্যটককে মুগ্ধ করবেই।
রাঙ্গামাটির কাপ্তাইে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানটি যেন অপরূপ মুগ্ধতা ছড়াই। কেননা কাপ্তাইে বয়ে চলা শীতল জলের কর্ণফুলী নদীর পাসেই গড়ে উঠেছে ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানটি। এই বিস্তৃন্ন সবুজ পাহাড়ে অপরূপ সৌন্দর্য গড়ে ওঠা ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানটি যে কাউকে আকর্ষন করবে। নীলাভ সবুজ চা এর সমারোহে যে কোনো মানুষ গেলেই সবুজের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে চাইবে।
জানা গেছে, ১৮৮৬ সালে ব্রিটিশ নাগরিক মিস্টার ডরিন এর নেতৃত্বে কর্ণফুলী নদীর উভয় তীরে ওয়াগ্গাছড়া এলাকায় চা বাগান সৃজনের কাজ শুরু হয়। প্রায় ৫০ বছর সময়কাল চা বাগানের কর্তৃত্ব ব্রিটিশদের হাতে থাকার পর এটির হাত বদলের ধারাবাহিকতায় চা বাগানের মালিকানা লাভ করেন নুরুল হুদা কাদেরী। বর্তমানে কাদেরী পরিবারের ব্যবস্থাপনায় ‘ওয়াগ্গাছড়া টি লিমিটেড’ নাম দিয়ে চা শিল্পের পরিচালনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ টি রিসার্স ইনস্টিটিউটের নতুন উদ্ভাবিত প্রায় সব কয়টি জাতই এ চা বাগানে চাষ করা হচ্ছে। ৩৭০ হেক্টর আয়তনের এ বাগানে বাগান কর্তৃপক্ষের নিজস্ব একটি ফ্যাক্টরিও রয়েছে।
এ বাগানে যারা কাজ করেন থাকেন তাদের সকল বেশিরভাগই স্থানীয় বাসিন্দা। এর মাধ্যমে উক্ত চা বাগানে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মানুষও জীবিকানির্বাহ করে আসছেন। ৩৭০ হেক্টর আয়তনের চা বাগানটি বেশ কয়েকটি পাহাড়ে বিভক্ত। চা বাগানের ভেতর দিয়ে স্থানীয় একটি মারমাপাড়ায় যাওয়া যায়। উজানছড়ি পাড়া নামের এই পাহাড়ি আদামে মারমা জনগোষ্ঠীর বসবাস। তারা অনেকটাই সহজসরল জীবনযাপন করেন; যা পাড়ার পরিবেশ দেখেই যে কেউ মুহূর্তের মাঝেই অনুভব করতে পারবে।
কথা হয় কাপ্তাই ওয়াগ্গাপাহাড়ের বুকে সবুজের সমারোহ ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানের ফিন্যান্স এন্ড প্লানিং বিভাগের পরিচালক ফয়সাল আমিন কাদেরীর সাথে তিনি জানান, রাঙ্গামাটি জেলার ওয়াগ্গাছড়া চা বাগান পার্বত্য অঞ্চল সহ দেশের মধ্যে একটি সুপরিচিত এবং সুনামধন্য চা বাগান। যেখানে প্রাকৃতিক অপরূপ পরিবেশে গড়ে উঠা চা বাগানটিতে আসলে যে কারো মন প্রাণ জুড়ে যাবে। তিনি আরো জানান, কাপ্তাই ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে অসহায় হতদরিদ্র অনেক বেকারদের কর্মসংস্থান তৈরির পাশাপাশি দেশের চা উৎপাদন ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখে আসছে।
এদিকে কাপ্তাই ওয়াগ্গা চা বাগানে কর্মরত রাজন জানান,তিনি দীর্ঘদিন ধরেই এই চা বাগানে কাজ করছেন। তিনি বলেন, অপরূপ সৌন্দর্যসৃষ্টি করা এই চা বাগানটিতে আসলে মন প্রফুল্ল হয়ে যায়।
কাপ্তাই ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে ঘুরতে আসা গনমাধ্যমকর্মী প্রান্ত রনি এবং ইমন চৌধুরী জানান, কাপ্তাইয়ে বিভিন্ন সময়েই ঘুরতে আসি। আমাদের চট্টগ্রাম শহর থেকে কাপ্তাই অনেকটা কাছেই। তবে চা বাগানে এই প্রথমবারই এলাম। চা বাগানের যেদিকে তাকাবেন সেদিকেই সবুজের সমারোহ। চা বাগানের পরিবেশ আমাদের মুগ্ধ করেছে।
আনন্দবাজার/শাহী/অর্ণব