দেশব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চরম অব্যবস্থাপনা দেখা দিয়েছে। সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে এক বৃদ্ধ মারা যাওয়ার পরও তার মরদেহ ১৮ ঘণ্টা সেখানেই রেখে দেয়া হয়। ফলে করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির মরদেহের পাশে রোগীদের দীর্ঘ সময় থাকতে হয়েছে। এতে ক্ষুদ্ধ রোগীরা হাসপাতালের চরম অব্যবস্থাপনার কথা জানিয়েছেন।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যান সদর উপজেলার সাতমাইল বারীনগর গ্রামের বৃদ্ধ শিতিষ চন্দ্র (৭৫)। মারা যাওয়ার পর তার স্বজনরা সেখান থেকে চলে যান। তবে মারা যাওয়া ব্যক্তির স্ত্রী আরতী চৌধুরীর দাবি, সন্তানেরা ঢাকায় থাকায় সময়মতো মরদেহ নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে, এর আগে গত বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) আবজাল গাফফার (২০) নামে এক যুবক জ্বর ও সর্দি নিয়ে নমুনা পরীক্ষার জন্য এলে তাকে করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার তার নমুনা নেয়া হয়।
মৃতের পাশে অবস্থানরত ওই যুবক জানান, একটি মরদেহের পাশে তাকে সারারাত কাটাতে হয়েছে। যা তাকে মানসিকভাবে অসুস্থ করে তুলেছে।
এ ব্যাপারে কথা হলে, সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মুশফিকুর রহিম জানান, যে কোনো সুস্থ রোগী মারা গেলেই রোগীদের পাশে রাখার নিয়ম নেই। আর এখানে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিকে তো রাখার সুযোগই নেই। তবে তিনি জানান, সন্ধ্যার দিকে ওই বৃদ্ধ মারা যাওয়ার পরপরই তার সৎকারের জন্য স্বজনদের জানানো হয়। কিন্তু স্বজনরা সময়মতো আসেননি। ফলে মরদেহ রাতে সেখান থেকে সরানো হয়নি।
একইসাথে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার অপূর্ব কুমার সাহা জানান, এ ঘটনায় রোগীদের সেখান থেকে সরানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। তবে রোগীদের প্রচণ্ড চাপ ও বেডের অপ্রতুলতার কারণে সমস্যা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ঝিনাইদহে ক্রমেই বেড়ে চলেছে করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা । ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিসের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. প্রসেনজিৎ পার্থ বিশ্বাস জানান, শুক্রবার নতুন করে জেলায় ১৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এতে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭৯৪ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এক হাজার ২৬৫ জন। আর করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলার ছয় উপজেলায় মারা গেছেন ৩১ জন। যার মধ্যে সদর উপজেলাতেই মারা গেছেন ২০ জন।
আনন্দবাজার/শাহী/বুরহান