শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্রীপুরে শিক্ষিকার দুই কন্যাসহ নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

সম্প্রতি গাজীপুরের শ্রীপুরে ফারজানা ইয়াসমিন নামে এক নারী শিক্ষিকা দুই শিশু সন্তান সাথে নিয়ে নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ওই নারী টেংরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

আজ বৃহষ্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টেংরা এলাকায় তার বসত বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে নিরাপত্তার আকুতি জানান। তিনি সংবাদ সম্মেলনে চার যুবককে অভিযুক্ত করে নিরাপত্তার দাবী তোলেন। যুবকেরা হলেন শ্রীপুর উপজেলা সদরের কবির হোসেনের ছেলে হোসাইন আলী বাবু, ভাংনাহাটী গ্রামের মৃত শাহিদ আলীর ছেলে মো. রাশেদুল হাছান, গোসিংগা গ্রামের মো. রাজিব প্রধান ও বিন্দুবাড়ি গ্রামের আঃ মতিনের ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে জানান, অভিযুক্ত মো. রাশেদুল হাছানের সাথে ওই শিক্ষিকার এক যুগ সংসার করার পর ডিভোর্স হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের দুটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। দুটি সন্তান নিয়ে তিনি পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। কন্যা সন্তান হওয়ায় এবং যৌতুকের দাবীতে তাকে ডিভোর্সের আগে নানাভাবে নির্যাতন করে আসছিল মো. রাশেদুল হাছান। এক পর্যায়ে ভিন্ন নারীর সাথে যোগাযোগ করে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এসব বিষয় নিয়ে ওই শিক্ষকের বাবা শ্রীপুর থানায় গত বছরের মে মাসে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

এদিকে, ওই মামলা প্রত্যাহারের জন্য অভিযুক্ত মো. হোসাইন আলী বাবু নানা সময় নানা কায়দায় ভয়-ভীতি ও হুমকি দিতে থাকে। শিক্ষিকার স্বামীকে সংসারে ফিরে পেতে সহায়তার কথা বলে তার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদাও দাবী করে। অন্যথায় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বদনাম রটিয়ে সংবাদ প্রচারের হুমকি দেয়। করোনা প্রাদুর্ভাবের আগে সে স্বামী-স্ত্রীর পারিবারিক বিষয় নিয়ে মানহানির উদ্দেশে তাঁর কর্মস্থল টেংরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে ক্যামেরা তাক করে তার নানা উদ্ভট ও আপত্তিকর প্রশ্নের জবাব দিতে বাধ্য করে। এতে বিদ্যালয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

আরও পড়ুনঃ  ধস নেমেছে মার্কিন শেয়ারবাজারে

পরে স্থানীয় অভিভাবকেরা এগিয়ে আসলে সে ক্যামেরাসহ পালিয়ে যায়। তার বিরুদ্ধে ডিএমপির কোতয়ালী থানা, গাজীপুরের শ্রীপুর থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা ও সাধারণ ডায়েরী রয়েছে। এতকিছুর পরও গত ১৭ জুলাই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে টেংরা-মাওনা সড়কে শিক্ষকের বাড়ির পাশে পথরোধ করে।

এসময় অভিযুক্তরা তাকে টেনে হিঁচড়ে একটি প্রাইভেটকারে তোলে নিতে চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তারা শ্লীলতাহানির চেষ্টা ও এসবের ছবি এবং ভিডিওচিত্র ধারণ করে। অভিযুক্তরা সঙ্ঘবদ্ধভাবে এসব অপকর্মে যুক্ত থাকে বলে তিনি অভিযোগ করেন। শিক্ষিকার বড় ভাই আক্তার মাস্টারকে জড়িয়ে একের পর এক মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মো. হোসাইন আলী বাবু জানান, তাকে হেনস্তা করা এবং ফাঁসানের চেষ্টা চলছে। কাউকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর কোনো চেষ্টা তিনি করেননি।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, এ ঘটনায় পরষ্পরবিরোধী মামলা,জিডি ও অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষকের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাহীনতার কোনো ঘাটতি নেই। নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করলে পুলিশ আইন অনুযায়ী নিরাপত্তা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। শিক্ষকের দায়ের করা অভিযোগটির সত্যতা না পাওয়ায় মামলা রুজু হয়নি।

আনন্দবাজার/শাহী/মহী

সংবাদটি শেয়ার করুন