বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ (সুরক্ষা) আইন ২০১৯ ব্যবসা বান্ধব বলে জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। এই কারণে বিনিয়োগকারীরা পুনরায় এই সেক্টরে নতুন করে বিনিয়োগ শুরু করেছেন। তাছাড়া কোভিড-১৯ এর ফলে পুরাতন জাহাজের দাম অর্ধেকে নেমে আসায়, বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা এই সুযোগটি গ্রহণ করেছেন।
করোনার প্রভাবে সারাবিশ্বে যখন বাণিজ্যে মন্দা তখনই নীল সমুদ্রে বাড়ছে লাল-সবুজের পতাকাবাহী সমুদ্রগামী জাহাজ। মহামারি করোনাকালে বিশ্বব্যাপী সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনে যেন বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে ধরা দিয়েছে।
সংকটময় এসময়ে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে আগষ্ট পর্যন্ত দেশের বহরে যোগ হয়েছে ১৬টি জাহাজ। ৮ মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশে সমুদ্রগামী জাহাজের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার ক্ষেত্রে এটি সর্বোচ্চ। আরো দুটি সমুদ্রগামী জাহাজ অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছে নৌবাণিজ্য অধিদপ্তর।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ (সুরক্ষা) আইন ২০১৯ ব্যবসা বান্ধব। তাই বিনিয়োগকারীরা পুনরায় এই সেক্টরে নতুন করে বিনিয়োগ শুরু করেছেন। এছাড়া করোনার কারণে পুরাতন জাহাজের দাম অর্ধেকে নেমে আসায়, বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা এই সুযোগটি গ্রহণ করেছেন।
জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত দ্য ইন্টারন্যাশনাল শিপ ব্রোকার এগার ফরেস্টার- এর জাহাজ বিক্রয় বিষয়ক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে ,বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত ২০ বছর বয়সী ৫০,০০০ – ৬০,০০০ ডেডওয়েট টনেজ (ডিডব্লিওটি) জাহাজ ক্রয় করে থাকে। আকার এবং জাহাজের বয়সের উপর নির্ভর করে এ জাতীয় একটি জাহাজের দাম ১২-১০ মিলিয়ন ইউএস ডলার থেকে ৬-৫ মিলিয়নে নেমে এসেছে। জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত দ্য ইন্টারন্যাশনাল শিপ ব্রোকার এগার ফরেস্টার- এর জাহাজ বিক্রয় বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশের বৃহত্তম সমুদ্রগামী জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা এসআর শিপিং লি: এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল জানান, ‘পুরাতন জাহাজের দাম কিছুটা কমেছে। তাই আমাদের প্রতিষ্ঠান দুটি জাহাজ কিনেছে।’
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সমুদ্রগামী জাহাজ খাতে বাংলাদেশের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এটি ৯শ’ কোটি ডলারেরও বেশি সাশ্রয় করতে পারে, যেটি এখন সমুদ্রগামী জাহাজে পণ্য পরিবহনে জন্য ব্যয় করা হচ্ছে। একইসাথে এখাতে ৬ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ অতিরিক্ত ৪শ’ কোটি ডলার আয়ের সুযোগ আছে।
মার্কেন্টাইল মেরিন ডিপার্টমেন্টের (এমএমডি) মতে, ২০১২ সালের আগে বাংলাদেশে ৭২টি সমুদ্রগামী কার্গো জাহাজ ছিল। কিন্তু ২০১২ সালে এ সংখ্যা কমে ৩৫টিতে নেমে আসে। ২০১৮ সালে এই সংখ্যা দাড়ায় ৩৬টিতে।
এরপর ২০১৯ সালে প্রণীত নতুন বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ (সুরক্ষা) আইনে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ (সুরক্ষা) অধ্যাদেশ ১৯৮২ থেকে সমুদ্রগামী জাহাজ পরিচালনায় ব্যবসায়ীদের বাধা দুর হয়েছে। নতুন আইন কার্যকর হওয়ার পর ১১টি জাহাজ এবং ২০২০ জানুয়ারি থেকে আগস্টের মধ্যে ১৬টি জাহাজ নিবন্ধিত হয়।
আনন্দবাজচার/এফআইবি