সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি অনলাইন পোর্টালে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদ করা করায় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াসমীন আক্তার (৩৮)কে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করাসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছ মিঠু মিয়া (৩২) নামের এক ব্যক্তি। গতকাল রোববার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার বৌলাম সরকারি প্র্থমিক বিদ্যালয়ের পেছনের সড়কে এই ঘটনা ঘটে। মিঠু মিয়ার বাড়ি উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের মাটিকাটা গ্রামে। স্থানীয় ববাদশাগঞ্জ ববাজারে তিনি দর্জিগির করার পাশাপাশি একটি অনলাইন পোর্টালে ধর্মপাশা উপজেলা প্রতিনিধির দায়িত্ব পাল করছেন।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে,উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের বৌলাম গ্রামের একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াসমিন আক্তার ও তার আপন ছোট ভাই পল্লী চিকিৎসক শাকিন শাহ এবং ভাইস চেয়ারম্যানের ভগ্নিপতি উপজেলার চকিয়াচাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুল মোনায়েম কে জড়িয়ে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে স্থানীয় একটি পক্ষের আর্থিক সুবিধা নিয়ে ধর্মপাশায় বিধবা নারী কে পিটিয়ে আহত শিরোনামে বাংলাদেশ বিডি ডট কম নামক একটি অনলাইন পোর্টালে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেন মিঠু মিয়া। উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে এই সংবাদ প্রকাশ করায় মিঠু মিয়ার কাছে এর কারণ জানতে চান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াসমীন আক্তার। এতে মিঠু মিয়া কর্ণপাত না করে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানকে মিঠু মিয়া হুমকি দিয়ে বলেন যে,উক্ত বিষয়ে আর কোনোদিন জিজ্ঞাসা করিলে আমি তোমাদেরকে জড়িয়ে আরও নিউজ করিব। আমাকে কেউ কিচ্ছু করতে পারবানা। এ সময় সে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে অশালীন আচরণ শুরু করে। এক পর্যায়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে সে্খান থেকে দ্রুত চলে যায়।
স্থানীয় এলাকার কয়েকজন নারী ও পুরুষ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রায় সময় বিভিন্ন মানুষের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মানুষকে সাংবাদিকতার ভয় দেখিয়ে মিটু মিয়া টাকা নেয়। যারা না দেয় তাদের বিরুদ্ধে ওঁৎ পেতে থাকে। সুযোগ পেলেই তাদেরকে গায়েল করার চেস্টা করে। তেমনি ইয়াসমিন আক্তারের বেলাও তাই করতে চেয়েছে কিন্তু ভাইস চেয়ারম্যান একজন জনপ্রতিনিধি। তাই তাঁর কাছে কোন সুযোগ সুবিধা না পেয়ে ললিতা নামক এক মহিলার কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে নিউজ করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। মিঠুর বিরুদ্ধে কিছুদিন পূর্বেও ধর্মপাশা সরকারি খাদ্য গুদামে চাঁদাবাজির অভিযোগ করে সংবাদসম্মেলন হয়েছে তা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে।
উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াসমিন আক্তার বলেন, আমাকে ও আমার ছোট ভাই সহ ভগ্নিপতি কে ঝরিয়ে সে নিউজ করেছে। কারণ আমি সবসময় তার অপ-সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি। সে সসাংকাদিকতার দোহাই দিয়ে বিভিন্ন লোকজনকে ভয়দেখিয়ে টাকা নিয়ে আসে।উপজেলা কর্মকর্তা থেকে শুরু করে চেয়ারম্যান,মেম্বার,ব্যবসায়ী সকলের কাছে সে একজন চাঁদাবাজ হিসেবে পরিচিত। সে আমার কাছে বিভিন্ন সময় টাকা চায়, কিন্ত আমি দেইনা। তাই সে আমার মানহানি করতে ও অপর পক্ষ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা নিউজ করেছে।
ইয়াসমিন আক্তারের ছোট ভাই পল্লী চিকিৎসক শাকিন শাহ বলেন, আমি আমার ফার্মেসি থেকে দেখি মিটু টেইলার ইয়াসমিন আপার সাথে উত্তেজিত হয়ে কথা বলতেছে। সে আপা কে দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়। তারপর আমি জানতে পারলাম সে নাকি আমাদের বিরুদ্ধে নিউজ করেছে। সে নাকি সাংবাদিকতা করে, আমি জানি সে একজন ট্রেইলার। ঘটনার দিন রাতেই আমার আপা নিজের নিরাপত্তার জন্য থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
মিঠু মিয়া তার ওপর আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন,উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াসমীন আক্তার তাঁর অপকর্ম কে ঢাকার জন্য আমার বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমি যে নিউজ করেছি সেটি সঠিক ছিল।
ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব।
আনন্দবাজার/শাহী/মোবারক