রাজধানীর আজিমপুরে অবস্থিত গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের নাম পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। “গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ” এই নামের পরিবর্তে “কলেজ অফ অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সাইন্স” এই নামে নতুন নামকরণ করা হতে পারে।
গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের নতুন নামকরণ এর যৌক্তিকতা উল্লেখ পূর্বক সুপারিশসহ মতামত প্রেরণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়(ঢাবি) রেজিস্ট্রার বরাবর চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। এদিকে, ২৩শে আগস্ট রবিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সরকারি কলেজ শাখার উপসচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডঃ শ্রীকান্ত কুমার চন্দ স্বাক্ষরিত এক আদেশে বিষয়টি জানানো হয়।
বিষয়টি প্রকাশের পর শিক্ষার্থীরা এ বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য ও মতামত পোষণ করছে। কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী বলছেন, “নতুন নামকরণ হলে, প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সঠিক ধারণা এবং নতুন পরিচিতি দানে সহায়তা করবে”। অন্যদিকে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীরা বলছেন, “এত বছরের পুরানো এবং ঐতিহ্যবাহী নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণ করাটা যৌক্তিক না।”
এসম্পর্কে উক্ত প্রতিষ্ঠানের শিল্পকলা ও সৃজনশীল শিক্ষা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মোহনা জাহ্নবী বলেনঃ-“গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ নাম শুনলেই কিছু মানুষ মন্তব্য করে, এখানে বুঝি( রান্না, ঘরের কাজ, বাচ্চা পালন) এসব গৃহস্থ ব্যাপার শেখানো হয় এবং প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থীকে এই নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। যদিও কিছু মানুষ এর প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে স্বল্প জ্ঞানের কারণে এসব কথা বলে। তবে নাম পরিবর্তন হলে, আস্তে আস্তে এসব বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে, আশা করি”।
এ নিয়ে প্রতিষ্ঠান এর দ্বিতীয় বর্ষের অপর এক শিক্ষার্থী আরিফা বিনতে আতাউর বলেনঃ-” আমাদের সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কিছু মানুষ গার্হস্থ্য কথাটি ভুল ভাবে নেয়। আসলে গার্হস্থ্য অর্থনীতি নাম নিয়ে তেমন সমস্যা না, তবে সমাজের কিছু সংখ্যক মানুষের এ প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ক্ষুদ্র জ্ঞান, বোঝার ভুল এবং দৃষ্টিভঙ্গির কারণে এই নামটা নিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের অনেক সময় বিড়ম্বনার শিকার হতে হয় এবং আগেও হয়েছে। গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ এই নাম নিয়ে এতদিন যে বিভ্রান্তি ও বিড়ম্বনা সহ্য করতে হয়েছে, নাম পরিবর্তন হলে হয়তো এ বিড়ম্বনা থেকে আমরা মুক্তি পাব”।
উল্লেখ্য, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ ১৯৬১সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের মেয়েদের একটি পেশা ভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।প্রথমে, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি উপাদানকল্প কলেজ হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে। ১৯৬১সাল থেকে কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক এবং১৯৬৩ সালে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পাঠদান কার্যক্রম শুরু করে।(১৯৮৫-১৯৮৬) শিক্ষাবর্ষে পাঁচটি বিভাগ, যেমনঃ-(খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান, সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এন্টারপ্রেনরশিপ, শিল্পকলা ও সৃজনশীল শিক্ষা, শিশু বিকাশ ও সামাজিক সম্পর্ক এবং বস্ত্র ও বয়ন শিল্প) এ পাঁচটি সম্মান কোর্স চালু করা হয়। (২০০২-২০০৩)শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান কোর্সে অনুরূপ চার বছর মেয়াদি স্নাতক সম্মান কোর্স এবং ১ বছর মেয়াদী স্নাতকোত্তর সম্মান কোর্স চালু করা হয়।
আনন্দবাজার/শাহী/সুরাইয়া