রফতানি বন্ধ থাকলেও উৎপাদনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কাঁকড়া চাষিরা। তবে যথাযথ দাম না পাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন এসব চাষিরা। যে কারণে তারা কাঁকড়া স্থানীয় বাজারে তুলছেন না।
খুলনার পাইকগাছার কাঁকড়া ব্যবসায়ী সালাহ উদ্দিন লিটন বলেন, কাঁকড়া ব্যবসায়ীদের অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) ঢাকায় একটি বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাঁকড়া রফতানি শুরু করতে প্রস্তুতি গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, কাঁকড়া রফতানি না হওয়ার কারণে স্থানীয় বাজারেও চাষিরা কাঁকড়া তুলছেন না। ফলে কাঁকড়ার কেনাবেচা একদমই বন্ধ রয়েছে। তবে, চাষিরা কম দামে কাঁকড়ার পোনা সংগ্রহ করে ঘেরে উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছেন। রফতানি শুরুর আশায় ঈদের আগে থেকেই উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। রফতানি বন্ধের আগে বিভিন্ন গ্রেডের কাঁকড়া ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা দরে পর্যন্ত বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু এখন বাজারে কোনও ধরনের কাঁকড়াই উঠছে না।
পাইকগাছার কাঁকড়া ব্যবসায়ী উত্তম কুমার সরকার বলেন, চীন নির্ভর কাঁকড়া ব্যবসা বন্ধের কারণে খুলনা তথা সুন্দরবন অঞ্চলের কাঁকড়া ব্যবসায়ীরা সংকটে রয়েছেন। এ পরিস্থিতি দীর্ঘ হওয়ার কারণে স্থানীয় বাজারেও কাঁকড়া তুলছেন না ব্যবসায়ীরা। তবে, রফতানি আগামী মাস থেকে শুরু হতে পারে এ আশায় চাষিরা উৎপাদন জোরদার করছেন।
পাইকগাছা কাঁকড়া ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুৎ কুমার ঘোষ জানান, রফতানি বন্ধ হওয়ার সঙ্গে বকেয়া অর্থও ব্যবসায়ীরা না পাওয়ায় সংকট বেশি ঘনিভূত হয়েছে। ঢাকার ব্যবসায়ীরা বকেয়া পরিশোধ করলেও স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কাঁকড়া চাষিরা নগদ কিছু টাকা পেত। তবে রফতানি শুরু হলেই চাষি ও ব্যবসায়ীরা চাঙা হয়ে উঠবেন।
খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু সাঈদ জানান, খুলনার ২৮ হাজার ৫৪৬ হেক্টর জমিতে কাঁকড়া চাষ হয়। ২০১৮-১৯ অর্থ বছর এ এলাকা থেকে ৬ হাজার ৯৮৯ মেট্রিক টন কাঁকড়া উৎপাদন হয়। ২০১৯-২০ অর্থ বছর ৭ হাজার মেট্রিক টন কাঁকড়া উৎপাদনের লক্ষ্য ছিল। কিন্তু রফতানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত কাঁকড়া চাষ সংকটে পড়ে।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস