ঢাকা | সোমবার
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কলমটি ফেলে দিলে পচে যাবে, ক্ষতি করবে না পরিবেশের

সম্প্রতি যশোরের নাসিমা ‘পরিবেশবান্ধব’ একটি কলম তৈরি করেছেন। তাঁর ভাষ্যমতে, ব্যবহার শেষে এই কলম ফেলে দেওয়া হলে পচে যাবে অল্প সময়ে এবং পরিবেশরও ক্ষতি করবে না তেমন।

জানা গেছে, এই কলম তৈরির উপকরণ হলো রঙিন কাগজ, আঠা, কলমের রিফিল এবং স্টিকার। এসব উপকরণ দিয়ে হাতেই প্রতিদিন ২০০ কলম তৈরি করছেন তিনি। ‘শুভ পরিবেশবান্ধব কলম’ নামে তা বিক্রি করা হচ্ছে মাত্র পাঁচ টাকা দরে। এটির লেখার মান প্রচলিত বলপয়েন্ট কলমের মতোই। প্রথম দিকে এই কলম নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্রি করছিলেন নাসিমা। কিন্তু করোনার প্রকোপ শুরু হলে বন্ধ হয়ে যায় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই পরিস্থিতিতে তিনি এখন কলম বিক্রি করছেন বিভিন্ন অফিস এবং দোকানে।

নাসিমা থাকেন যশোর শহরের লোন অফিস পাড়ায়। পড়ালেখা করেছেন চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত। বিয়ে হয় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদস্য মীর রবিউল আলম বাচ্চুর সাথে। ২০০০ সালে চাকরি থেকে অবসর নেন বাচ্চু। শ্রবণপ্রতিবন্ধী স্বামী এখন বেকার। পরিবারে আরও দুই সদস্য আছে মেয়ে রেবেকা সুলতানা ও ছেলে মীর নাঈম আলম শুভ। মেয়ে ঢাকায় একটি কলেজে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স করছেন। ছেলে এবার এসএসসি পাস করেছে। এখন ছেলে তাঁর কলম তৈরি এবং বিক্রির কাজে সহায়তা করে।

গত বুধবার দুপুরে বাড়িতে গিয়ে কথা হলো নাসিমার সাথে। বললেন, ‘প্লাস্টিকের মাধ্যমে পরিবেশের ক্ষতির ব্যাপারটি আমি জানি। দেশে প্রতিদিন হাজার হাজার প্লাস্টিকের কলম ব্যবহার করা হয়। কালি শেষ হলে সেসব কলম মানুষ যেখানে-সেখানে ফেলে দেয়। ব্যবহার শেষে এমন ফেলে দেওয়া কলমের সংখ্যা লাখ লাখ। প্লাস্টিকের তৈরি এসব কলম পচে না, নষ্টও হয় না; বরং পরিবেশের, মাটির ক্ষতি করে।

বছর তিনেক আগে পরিবেশবান্ধব এই কলম তৈরির কথা মাথায় আসে নাসিমার। মনে পড়ে ছোটবেলায় ঝাঁটার কাঠিতে কাগজ পেঁচিয়ে কলম বানানোর কথা। সেই ধারণা থেকেই কাগজ, আঠা, কলমের রিফিল ও স্টিকার দিয়ে বানান নতুন ধরনের এই কলম।

আনন্দবাজার/এইচ এস কে

সংবাদটি শেয়ার করুন