ফেসবুক এবং মেসেন্জারসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের জন্য মোবাইল অপারেটরদের দেওয়া ফ্রি ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির নির্দেশনা অনুসারে বর্তমানে আর কোনো অপারেটর ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা দিতে পারবেনা। এর কারণে বিপুলসংখ্যক সাধারণ গ্রাহক যারা ফ্রি ইন্টারনেট দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক চালাতেন তারা বেকায়দায় পড়েছে।
গ্রাহকরা জানান, বিটিআরসি যে প্রেক্ষাপট দেখিয়ে এটা বন্ধ করল তাতে কি অপরাধ নিয়ন্ত্রণে থাকবে? অপরাধীরা কি শুধু মাত্র ফ্রি ইন্টারনেট দিয়েই অপরাধ করে? আর অপারেটররা যদি ফ্রি ইন্টারনেট দেওয়ার প্রতিযোগিতা করে তাহলে সরকারের সমস্যা কী? সাধারণ মানুষ তো লাভবান হচ্ছে।
গত সপ্তাহে বিটিআরসির এক বিজ্ঞপ্তিতে মোবাইল অপারেটরগুলোকে সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কিত সেবা ফ্রি বা বিনা মূল্যে প্রদানে বিরত থাকার আদেশ দেন। যেখানে কারণ হিসেবে বাজারে অসুস্থ প্রতিযোগিতা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষাপট উল্লেখ করা হয়। এরপর গত ১৬ জুলাই অপারেটররা নিজেদের বিভিন্ন ফ্রি ফেসবুকসহ সোশ্যাল মিডিয়ার প্যাকেজ বন্ধ করে দেয়।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানিয়েছেন, ‘এটা বন্ধ করার কয়েকটি কারণ রয়েছে। এর একটি হলো অপরাধীরা ফ্রি ইন্টারনেটের সুবিধা গ্রহণ করছে। আমরা দেখেছি, যারা ফ্রি ইন্টারনেট দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছেন তাদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ খারাপ কাজে জড়িত। পাশাপাশি অপারেটরদের মাঝেও ফ্রি ইন্টারনেট দিয়ে গ্রাহক টানার যে প্রতিযোগিতা তাতে সরকার রাজস্ব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’ টাকা দিয়ে ইন্টারনেট কিনলে কি সেই ইন্টারনেট অপরাধ কাণ্ডে ব্যবহার হবে না? জবাবে মন্ত্রী জানান, কেউ যখন টাকা খরচ করে কিছু করেন সেটা দিয়ে খারাপের চেয়ে ভালো কাজই বেশি হয়।
সরকার শিক্ষার্থীদের ফ্রি বা স্বল্পমূল্যে যেখানে ইন্টারনেট দিতে মোবাইল অপারেটরদের সাথে আলোচনা করছে, ঠিক সেই সময়ে ফ্রি ইন্টারনেট প্যাকেজ বন্ধ কি দ্বৈত নীতি না? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরো বলেছেন, শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট দিলে তো তারা সেটা লেখাপড়ার কাজে ব্যবহার করবে। এখানে তো অপরাধ হওয়ার সুযোগ নেই। আর এখন ইন্টারনেট তো শিক্ষা কারিকুলামেরই একটা অংশ হয়ে গেছে।
আনন্দবাজার/এফআইবি