সীমিত সম্পদ দিয়েও যে ঘন বসতিপূর্ণ একটা ছোট্ট দেশে উন্নয়নের অগ্রযাএা অব্যাহত রাখা যায়, ইতিমধ্যে বাংলাদেশ তা প্রমাণ করতে পেরেছে। দেশের অর্থনীতিতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাএা ( এসডিজি) পূরণে একটা বড় ভুমিকা রাখতে পারে দেশের তরুণ উদ্যোক্তারা।
ঠিক এমনি ভাবে বাংলাদেশকে বিশ্বের মানচিএে সম্মানের সঙ্গে তুলে ধরতে হলে তরুণ উদ্যোক্তাদের ভূমিকাই তো এখন সময়ের দাবী। সামাজিক উদ্যোক্তা আন্দোলন থেকে শুরু করে লাভজনক/অলাভজনক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা প্রতিটি ক্ষেএে সম্ভাবনাময় তরুন উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। এরই ধারাবাহিকতায় গাজীপুরের কাপাসিয়ার কড়িহাতা ইউনিয়নের ইকুরিয়া বাজার এলাকায় ২৫ জন কর্মজীবী তরুণ যুবক তাদের পেশার পাশাপাশি উদ্যোক্তা হওয়ার প্রয়াসে শুরু করে গবাদি পশু লালর-পালন ও হৃষ্ট-পুষ্ট করার খামার।
২০১৬ সালের আগষ্ট মাসের প্রথম দিকে শুরু করে এই তরুন উদ্যোক্তাদের কার্যক্রম। প্রথমে ২০ থেকে ২৫, আবার ২৫ থেকে ৫০-এ এগিয়ে যায় সদস্যপদ। এদিকে নতুন উদ্যমে ২০১৮ সালের ৮ জুন শুরু হয় তাদের শুরু করা প্রথম প্রয়াস। গরু হৃষ্ট-পুষ্ট করে তা বাজারজাত করার প্রক্রিয়া। কাজ শুরু করার প্রথম পর্যায়ে বিভিন্ন রকম প্রতিবন্ধকতা আসে, যেমনটা উদ্যোক্তা হলে মেনে নিতে হয়। আর এই মেনে নেওয়ার মানসিকতা থেকেই সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে আজ অব্দি এগিয়ে চলেছে হ্যান্ডশেক এগ্রো প্রাঃ লিমিটেড।
এদিকে হ্যান্ডশেক এগ্রো নামক প্রতিষ্ঠানটির তরুণ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া রুবেল দৈনিক আনন্দবাজার কে জানান, কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে আত্মপ্রকাশ করতে গিয়ে, গবাদি পশু হৃষ্ট-পুষ্ট করার প্রকল্পটি শুরু করি। শুরু করার প্রথম দিকে বেশ বড় ধরণের প্রতিবন্ধকতার সমুক্ষিণ হতে হয়েছে আমাদেরকে। প্রথমেই গবাদি পশুদের লালন-পালনে খাবারের সংস্থান করা আমাদেরকে ভাবিয়ে তোলে ব্যাপক। পরবর্তিতে আমরা সাইলেজ উৎপাদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিজেরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে সাইলেজ বিক্রেতা হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করি। অর্থাৎ আমরা যেখানে হোচট খেয়েছি,সেখান থেকেই শিখেছি। আর এটাকেই প্রতিবন্ধকতা উতরে যাওয়ার মন্ত্র হিসেবে নিয়ে সফল ভাবেই পার করেছি প্রত্যেকটি পথ
তিনি আরো জানান, আমাদের এই পথচলার পিছনে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তাসহ অএ অফিসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহযোগিতা ছিলো আশাপ্রদ।
এদিকে হ্যান্ডশেক এগ্রো খামারটি সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে কাপাসিয়া উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আনিসুর রহমান জানান, কাপাসিয়ায় মোট খামারির সংখ্যা ১ হাজার ৫২০টি। তবে এদের মধ্যে প্রান্তিক খামারিও রয়েছে। তাদের মধ্য থেকে এবার সর্বমোট ৮ হাজার ৩৬০টি কোরবানির বিক্রির জন্য উপযোগি করা হয়েছে। তবে করোনা মহামারির কারণে আসন্ন কোরবানির ঈদে মানুষদেরকে স্বাস্থ্য সম্মতভাবে পশু ক্রয়-বিক্রয় করার জন্য উপজেলা পশু সম্পদ অফিস এবং খামারিদের সমন্বয় করে একটি অনলাইন বিক্রয়ের প্লাটফর্ম তৈরি করে ফেলেছি। যা ইতিমধ্যে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে।
হ্যান্ডশেক এগ্রো প্রাইভেট লিমিটেডের অন্যতম উদ্যোক্তা ও পরিচালক মাহফুজুর রহমান মামুন জানান, আমিষের চাহিদা পূরণে এবং স্বাস্থ্য সম্মত মাংস উৎপাদন ও দেশের মধ্যে স্বনামধন্য মাংস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান গড়াই আমাদের একমাএ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
তিনি আরো জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তরুনদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। ইতিমধ্যে আমাদের খামারের কার্যক্রম দেখে ও এখান থেকে পরামর্শ নিয়ে এই গ্রামে আরো দুটি এগ্রো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। আমাদের উদ্যোক্তা কমিউনিটির মধ্যে একটা বিষয় প্রতিষ্ঠা করতে চাই যা হলো- ‘দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ”। আমরা এই কাজের মাধ্যমে আমাদের পুরো কাপাসিয়াকে এই আওতায় আনতে চাই।
আনন্দবাজার/সবুজ