সুস্বাদু খাবার তৈরির কারিগর বাবুর্চিদের ঘরেই এখন খাবার নিয়ে টানাটানি। করোনা সংক্রমণের ফলে সামাজিক ও ঘরোয়া আয়োজন বন্ধ থাকায় ৪ মাস ধরে বেকার বাবুর্চিরা। রাজধানীর বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও ডেকোরেটরের সাথে জড়িত প্রায় ৫ লাখের বেশি বাবুর্চির অনেকেই অন্যকোন কাজ করে সংসার চালানোর চেষ্টা করছেন।
সংসারের ঘানি টানতে টানতে ক্লান্ত শরীরে বাসা বেধেছে নানারকম অসুখ। তারপরও জীবনযুদ্ধে একমুহূর্ত থামার সুযোগ নেই মো আবুল কালাম বাবুর্চির। করোনা মহামারি যেন পুড়ে যাওয়া কয়লার মতো তার জীবন-জীবিকাকেও অঙ্গার করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, মাইনষেরে আমরা রাইন্ধা-বাইড়া খাওয়াই, আর এখন আমরা খাওয়ার কষ্ট করতেসি। এর মধ্যে ১০ পয়সার ইনকাম নাই। ভিক্ষা ছাড়া উপায় নাই আমাদের।
ধুলোজমা হাড়ি পাতিলের সাথে যাদের জীবন জড়িয়ে আছে করোনা মহামারিতে রান্নার সেই কারিগরদের কপালেও পরেছে অনিশ্চিয়তার কালো ছায়া। এতদিন যারা সুস্বাদু খাবার রান্না করে এসেছে, কাজ হারিয়ে আজ তাদের ঘরই খাবারশূণ্য।
সীমিত আকারে দোকান পাট-অফিস খুললেও খোলেনি কমিউনিটি সেন্টার, ডেকোরেটর, হোটেল-রেস্টুরেন্ট। নেই কোন ঘরোয়া বা সামাজিক আয়োজন। ফলে ৪ মাস ধরে বন্ধ বাবুর্চিদের কাজ।
১০ বছর ধরে রাজধানীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে কাজ করছেন জামাল বাবুর্চি। তবে, জীবনের প্রয়োজনে শেষমেশ রিকশার প্যাডেলই এখন তার সঙ্গী। তিনি বলেন, বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় রাস্তায় নামতে হয়েছে তাকে।
বাবুর্চিদের কোনো সংগঠন না থাকলেও তারা বলছেন, রাজধানীতে প্রায় ৫ লাখের বেশি রান্নার কারিগরের পরিবারে চলছে হাহাকার। আরও এক বাবুর্চি জানান, এখন তো কাজ-কাম নাই তাই আলু-পেঁয়াজ বিক্রি করে সংসার চালাতে হয়।
করোনার এই আঁধার হয়তো একদিন কেটে যাবে। সে পর্যন্ত টিকে থাকার যুদ্ধটা কতক্ষণ চালিয়ে যেতে পারবেন তারা, ঝাপসা চোখ খুঁজে ফিরছে এই প্রশ্নের উত্তর।
আনন্দবাজার/তা.তা