প্রতি বছরই বাজেটে নতুন নতুন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় ঠিকই, কিন্তু পরের বছর বাজেটে নতুন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময় হারিয়ে যায় আগের দেওয়া প্রতিশ্রুতি। যেমন সম্প্রতি পাস হওয়া নতুন বাজেট থেকে একেবারেই উধাও হয়ে গেছে ব্যাংক খাতের সংস্কার এবং কমিশন গঠনের আগের দেওয়া প্রতিশ্রুতিটি।
তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে প্রথম ব্যাংক কমিশনে গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর প্রতিটি বাজেটে একই ঘোষণা বার বার দেওয়া হয়। গেল ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে আরও স্পষ্ট করে একই ঘোষণা দেন বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। কিন্তু চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের নতুন বাজেটে এ নিয়ে কোনো কথাই আলোচনা করা হয়নি।
তাহলে কি দেশে ব্যাংক কমিশন গঠনের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে গেছে, ভালো হয়ে গেছে দেশের ব্যাংক খাত?
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর জানান, আপনি জানেন না, দেশের ব্যাংক খাতগুলো এখন আগের থেকে ভালো হয়ে গেছে! সব প্রভাবশালী, ঋণখেলাপিরা নিয়মিত টাকা ফেরত দিয়ে দিচ্ছেন! এ কারনেই মনে হয় পরিকল্পনা করেই এসব বাদ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, পরিচালনা এবং তদারকি অবহেলা ও দুর্বলতার কারণে বেশ খারাপ পরিস্থিতিতে পড়ে আছে দেশের ব্যাংক খাতগুলো। বেনামি এবং খেলাপি ঋণে জর্জরিত কয়েকটি ব্যাংক।
২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে বর্তমান অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ব্যাংক এবং আর্থিক খাতের উন্নয়ন করার জন্য একটি ব্যাংক কমিশন প্রতিষ্ঠার কথা আমরা অনেকদিন ধরে শুনে আসছি। ব্যাপারটি নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট সবার সাথে আলোচনার ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
কিন্তু ঘোষণার পরে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও পড়ে তা থেমে যায়। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ব্যাংক কমিশন গঠন করলে ব্যাংক খাতের আরও দুর্বল চিত্র বের হয়ে আসতে পারে। এ জন্য সরকার কোনো এই ব্যাপারে কোন ঝুঁকি নিতে চাইছে না।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে