নীলফামারীর সৈয়দপুরে গবাদি পশুর মাঝে ব্যাপকহারে ভাইরাসজনিত রোগ লাম্পি স্কিন দেখা দিয়েছে। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে এরই মধ্যে ২০টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। রোগের বিস্তার ঘটায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গরুর খামারিরা। উপজেলায় এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ১ হাজার গরু।
উপজেলার কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধুপুর, বোতলাগাড়ি ও বাঙালিপুর ইউনিয়নে ব্যাপকহারে গবাদিপশুর মাঝে এই ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে কামারপুকুর ইউনিয়নের দক্ষিণ নিয়ামতপুর গ্রামে ৪টি গরু, একই ইউনিয়নের দলুয়া চৌধুরীপাড়ায় গোলাম মোস্তফার একটিসহ অন্যান্য ইউনিয়ন মিলিয়ে মোট ২০টি গরু মারা গেছে।
এই রোগে প্রথমে গরুর চামড়া ফুলে যায়, তারপর জ্বর আসে গবাদিপশুর। একসময় চামড়ায় ফোসকা পড়ে মাংস খুলে পড়ে যায়। এসব ভাইরাস আক্রান্ত গরু সস্তায় কিনে নিয়ে স্থানীয় কসাইরা হাটবাজারে জবাই করছেন। ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে মানুষের।
খাতামধুপুর ইউনিয়নের খালিশা দর্জিপাড়া এলাকার মমতাজ নামের গরুর মালিক জানান, আমার গাভীটি কয়েকদিন আগে একটি বাছুর প্রসব করেছে। গত প্রায় ৫ দিন থেকে দেখছি গরুটির পায়ের হাটুর কাছে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় গ্রাম্য পশু চিকিৎসক আপাতত কর্পূর লাগাতে বলেছে। এসময় ইনজেকশন দিলে দুধ কমে যেতে পারে তাই অন্য কোন চিকিৎসা দেয়নি।
একই গ্রামের জাকির হোসেন বলেন, তার গুরুর কয়েকদিন আগে সারা শরীরে গোটা গোটা ফোলা দেখা গেছে। পরে এই ফোলা অংশ ফেটে ভিতর থেকে রক্ত মিশ্রিত পূজ বের হয়েছে। তবে পশু হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেয়ায় এখন মোটামোটি ভাল আছে। গ্রামের প্রায় বাড়িতেই গরুর ক্ষেত্রে এ রোগ দেখা দিয়েছে।
সৈয়দপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডাঃ রাশেদুল হক বলেন, এই ভাইরাসটি গেল বছর থেকে দেখা যাচ্ছে। এবছর রোগটি ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়েছে। গবাদি পশু চাষিরা এই রোগের সঙ্গে লড়াই করছেন। দেশের বাইরে থেকে যে পশুগুলো দেশে আসছে তাদের পরীক্ষা না করার কারণেই এই ভাইরাসজনিত রোগটি ছড়িয়ে পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, এ রোগে মৃত্যুহার কম হলেও দুগ্ধ উৎপাদন ও পশু চামড়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকি বাড়ছে। এ রোগে আক্রান্ত হলে পশুর চামড়া অনেকটাই অকার্যকর হয়ে যায়। আবার গাভী আক্রান্ত হলে দুগ্ধ উৎপাদন কমতে থাকে।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস/এস এ