পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে অবস্থিত কাপ্তাই উপজেলা। কাপ্তাইয়ের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে দেশের অন্যতম বৃহত্তম লেক, রয়েছে উঁচু-নিচু পাহাড়, পাহাড়ের পাশে বয়ে যাওয়া আঁকাবাঁকা শীতল জলের কর্ণফুলী নদী, নদী ধারে গড়ে উঠা অনেক পর্যটন কেন্দ্র।
প্রতিবছর ঈদ উপলক্ষে পর্যটন কেন্দ্র গুলোতে পর্যটকের ঢ়ল নামলেও এইবার পর্যটক শূণ্য হয়ে হাহাকার করবে পর্যটন কেন্দ্র গুলো। অবশ্য ইতিমধ্যে বিশ্ব করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধ করতে গিয়ে সরকারি নির্দেশ মোতাবেক গত ২৫ মার্চ থেকে দেশের সবধরনের পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
প্রাকৃত্তিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কাপ্তাইয়ে রয়েছে অনেক জনপ্রিয় পর্যটন স্পটসমূহ যেখানে কাপ্তাই ছাড়াও রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকের আগমন ঘটতো ঈদ উপলক্ষে। কিন্তু এইবার যেন অন্য রকম একটা সময় যেটি এর আগে কখনও কাপ্তাইয়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর ইতিহাসে আসেনি। কারণ এই প্রথম ঈদে পর্যটক শূণ্য হয়ে হাহাকার করবে কাপ্তাইয়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলি। প্রতিবছর ঈদ উপলক্ষে কেন্দ্রগুলোতে হাজার হাজার পর্যটকদের আগমনের আনন্দে প্রাণ ফিরে পেলেও এইবার সেই স্পট গুলো পর্যটক শূণ্য হয়ে থাকবে প্রাণহীন।
আর শুধু তাই নয় এই ঈদ উপলক্ষেই পর্যটকের আগমনে অনেক টাকা আয় হতো কাপ্তাই পর্যটনকেন্দ্র গুলোর। কিন্তু এইবার আয় তো হচ্ছেই না বরং করোনা সংক্রমন প্রতিরোধে পর্যটন কেন্দ্র গুলো প্রায় ২ মাসের অধিক সময় বন্ধ থাকার ফলে গুনতে হচ্ছে কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি। যার প্রভাব বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে ও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
কাপ্তাই উপজেলায় বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে যার মধ্যে অন্যতম কাপ্তাই প্রশান্তি পার্ক, জুম রেস্তোরা, বনশ্রী পর্যটন কেন্দ্র, লেক প্যারাডাইস, লেকশোর পিকনিক স্পট, জীপতলি পিকনিক স্পট, বেরাইন্না লেক, লেকভিউ আইলেন্ড সহ বিভিন্ন জনপ্রিয় পর্যটন স্পট।
কাপ্তাই শিলছড়ি বনশ্রী পর্যটন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী রুবাইয়াৎ আক্তার জানান, করোনা ভাইরাসের ফলে প্রায় ৩ মাস হলো বনশ্রী সহ কাপ্তাইয়ে সব কয়টি পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। প্রতি বছর ঈদে কাপ্তাইয়ে হাজার হাজার পর্যটক কাপ্তাইয়ে আসতো। এবার সেই সম্ভাবনা নেই, ফলে লাখ লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছে পর্যটন কেন্দ্রগুলো। তিনি জানান, ঝড়ো হাওয়ায় কর্নফুলির নদীর ধারে অবস্হিত বনশ্রীর কটেজ গুলো নষ্ট হয়ে গেছে।
এদিকে কাপ্তাই বালুচরে অবস্হিত প্রশান্তি পিকনিক স্পট এর পরিচালক কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন জানান, কাপ্তাইয়ের অপরুপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে পর্যটন মৌসুম ছাড়াও সারা বছর পর্যটকদের আনাগোনা হতো। বিশেষ করে ঈদের ছুটিতে পর্যটকের ঢ়ল নামতো। কিন্ত এই বার করোনার প্রকোপে পর্যটক শূণ্য থাকবে কাপ্তাই। ফলে আমরা বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হবো।
কাপ্তাই ফোরামের এডমিন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এ আর লিমন জানান, নয়নাভিরাম কাপ্তাই লেক, কর্নফুলি নদী, পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কেপিএম মিল, সীতাপাহাড়, ওয়াগ্গা চা বাগান, চিৎমরম বৌদ্ধ বিহার সহ কাপ্তাইয়ের প্রতিটি পড়তে পড়তে লুকিয়ে আছে সৌন্দর্য্য। তাই তো সারা বছর কাপ্তাইয়ে পর্যটকের আনাগোনা থাকতো, কিন্তু এবার করোনা ভাইরাসের প্রকোপে কাপ্তাই পর্যটন শূণ্য থাকবে।
একদিন সেই মেঘ কেটে যাবে, আবার উঠবে সোনালী সূর্য্য, আবার কোলাহল হবে কাপ্তাইয়ের প্রতিটি বিনোদন স্পট- সকলের সেই প্রত্যাশা।
আনন্দবাজার/শাহী