ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনায় মারা যাওয়া চিকিৎসকের জন্য এলাকাবাসীর কাঁন্না

সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামে এসে হতদরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতেন করোনাভাইরাসে মৃত সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারি অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দিন। যারা একেবারেই অসহায় তাদেরকে বিনামূল্যে ওষুধও দিতেন তিনি। কোম্পানি থেকে পাওয়া ওষুধের স্যাম্পল তিনি বিলিয়ে দিতেন এলাকার হতদরিদ্র রোগীদের মধ্যে।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে শুধু এলাকার অসহায় মানুষদেরই তিনি সেবা দিতেন না, বরং সিলেটের চেম্বারে এলাকার কেউ গেলে তাদেরকেও বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতেন। এখন এলাকার সর্বস্তরের মানুষ এমন গরিবের বন্ধু ডাক্তারকে হারিয়ে শোকে কাঁদছেন। করোনা আতংকে উপেক্ষা করে তারা গ্রাম ও এলাকা থেকে বেরিয়ে পরষ্পরের সঙ্গে স্মৃতিচারণ করছেন।

ডা. মঈন উদ্দিনের পিতা মুনসী আহমদ উদ্দিন একজন পল্লী চিকিৎসক ছিলেন। পল্লী চিকিৎসক পিতা তার মৃত্যুর আগে ছেলেকে বলে গিয়েছিলেন, এলাকার অসহায় রোগীদের যেন নিয়মিত সেবা দেন। শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত পল্লী চিকিৎসক বাবার আদেশ পালন করেছেন ডা. মঈন উদ্দিন।

বাবার শেষ কথা রাখতেই, প্রতি শুক্রবার সরকারি ছুটির দিনে সিলেট থেকে এলাকায় ছুটে আসতেন তিনি। বিনামূল্যে অসহায়দের ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পও করেছেন তিনি। এমন মানবিক মানুষ মানুষের সেবা করতে গিয়েই অবশেষে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এলাকার হিন্দু মুসলিম সবাই এই মৃত্যুর খবরে মর্মাহত। তাদের অনেকেই মৃত্যুসংবাদ শুনে অঝোর ধারায় কেঁদেছেন।

ডাক্তার মঈন উদ্দিনের গ্রামের বাসিন্দা গিরিধর দাস জানান, ডা. মঈন উদ্দিন একজন অসাম্প্রদায়িক মানুষ ছিলেন। গরিব অসহায়দের তিনি বিনামূল্যে সেবা দিয়ে গেছেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে সব মানুষ কাঁদছে।

আনন্দবাজার/তা.তা

সংবাদটি শেয়ার করুন