শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনায় ধস নেমেছে রেমিট্যান্সে, সঙ্কটের মুখে দেশের অর্থনীতি

লকডাউন থাকায় রেমিট্যান্স পাঠাতে পারছনে না প্রবাসীরা
বাড়বে দারিদ্র, সঙ্কটে পড়বে দেশের অর্থনীতি

করোনা ভাইরাসের প্রভাবে অবরুদ্ধ পুরো বিশ্ব। থমকে আছে বিশ্বের ব্যবসা-বাণিজ্য। ঘর বন্দি রয়েছে বিশ্বের মানুষ। চাকরি হাড়াচ্ছে হাজার হাজার প্রবাসী। বন্ধ হয়ে গেছে রেমিট্যান্স পাঠানো। ধাক্কা লেগেছে দেশের অর্থনীতির সূচকগুলোর মধ্যে।  দিন দিন সঙ্কটের মধ্যে পড়ছে দেশের অর্থনীতি। করোনায় প্রবাসীদের জন্য সামনের দিনগুলো কঠিন হওয়ার পাশাপাশি অব্যাহত থাকবে রেমিট্যান্সের নেতিবাচক ধারা বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্নিষ্টরা। একই সাথে বেকার হচ্ছে দেশের হাজার হাজার মানুষ।

এদিকে বেশিরভাগ দেশে লকডাউন থাকায় প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারছেন না। আবার কিছু কিছু দেশ থেকে অনলাইনে রেমিট্যান্স পাঠানোর সুযোগ থাকলেও দক্ষতার অভাবে তা কাজে লাগাতে পারছে না। এতে গত ১০-১৫ দিনে ধরে রেমিট্যান্স পাঠানো প্রায় বন্ধ।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মার্চের শুরু থেকেই অনেক দেশ অবরুদ্ধ। সব মানুষ ঘরে বন্দি। দোকান-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলছে না। কাজ নেই, আয়ের পথও বন্ধ। এভাবে আর কিছুদিন চলতে থাকলে নিজেদের খরচ মেটানোই দায় হয়ে যাবে।

দেশের রেমিট্যান্স আহরণের সবচেয়ে বড় উৎস মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশ সৌদি আরব। করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৫ মার্চ থেকে দেশটিতে লকডাউন চলছে। সব ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এখানকার প্রবাসীদের অনেকের কাজ নেই। খুব কষ্টে দিন পার করছেন দেশটির প্রবাসীরা।

সৌদি প্রবাসী মোসারফ হোসেন বলেন,  দেশে মা-বউ-বাচ্চা আছে। তাদের জন্য টাকা পাঠানো দরকার কিন্তু সবকিছু বন্ধ থাকায় টাকা পাঠাতে পারছি না। এদিকে কাজ বন্ধ নিজেরই থাকা খাওয়ার খরচ জুগার করতে পারছি না।এছাড়া সব বন্ধ, বের হলে পুলিশ ঝামেলা করে। তাই বাইরে যাই না, ঘরেই থাকছি। কয়দিন নামাজের জন্য বের হয়েছি কিন্তু দুই সপ্তাহ ধরে তাও বন্ধ। খুব সমস্যায় আছি।

আরও পড়ুনঃ  অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ দেশের সকল খেলাধুলা

রেমিট্যান্সের নেতিবাচক প্রবাহের  সার্বিক অর্থনীতিতে পড়বে জানিয়ে অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবিএম মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, রেমিট্যান্স আমাদের সার্বিক অর্থনীতির চাহিদা পূরণে অন্যতম ভূমিকা পালন করে। তাই রেমিট্যান্স যখন কম আসবে তখন দেশের সার্বিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে। বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতির যে অবস্থা দাঁড়াচ্ছে এতে আগামী ছয় মাস-এক বছরে এর উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে বলে মনে হচ্ছে না।

সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২৪ মার্চ পর্যন্ত ১১৮ কোটি ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে। গত বছরের মার্চের একই সময়ে এসেছিল ১২০ কোটি ডলার। এ হিসাবে রেমিট্যান্স কমেছে দুই কোটি ডলার বা ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

আনন্দবাজার/রনি

সংবাদটি শেয়ার করুন