ঢাকা | শনিবার
১৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৪ঠা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করল ইসরায়েল, কী আছে চুক্তিতে

ইসরায়েল সরকার সম্প্রতি হামাসের সঙ্গে একটি নতুন যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তি অনুমোদন করেছে। এই চুক্তি রবিবার থেকেই কার্যকরের পথে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, “এটি যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে।”

চুক্তির মূল বিষয়

প্রথম ধাপ:

হামাসের হাতে থাকা ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি পাবে।
এর বদলে ইসরায়েল ১০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে।
ইসরায়েলি সেনারা গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে সরে যাবে।
বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার অনুমতি পাবে।
প্রতিদিন গাজায় ছয়শো ত্রাণবাহী লরি প্রবেশ করবে।

দ্বিতীয় ধাপ:

বাকী জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনার সম্পূর্ণ প্রত্যাহার।
এই ধাপে “টেকসই শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার” লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

তৃতীয় ধাপ:

গাজার পুনর্গঠন, যা কয়েক বছর ধরে চলবে।
মৃত ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহ ফেরত আনা হবে।

চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে বিতর্ক

ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা চুক্তির সুপারিশ করলেও, দুইজন কট্টর ডানপন্থী মন্ত্রী এই চুক্তির বিরোধিতা করেন।

ডানপন্থী নেতাদের প্রতিক্রিয়া:

জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-জিভির এই চুক্তির কঠোর বিরোধিতা করেন। তিনি এটিকে “সন্ত্রাসীদের মুক্তি” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মটরিচও চুক্তির পরে আবার যুদ্ধ শুরুর দাবি জানিয়েছেন।

জিম্মি পরিবারগুলোর উদ্বেগ

কিছু জিম্মি পরিবার এই চুক্তি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। তারা চুক্তির সব ধাপ সম্পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।
“৪৬৯ দিন ধরে আমাদের স্বজনেরা জিম্মি অবস্থায় আছে,” বলেন জিম্মি মায়ের। “এই চুক্তি শেষ পর্যন্ত অনুসরণ করা উচিত।”

মধ্যস্থতাকারীদের ভূমিকা

কাতার, যুক্তরাষ্ট্র, এবং মিশর এই চুক্তির মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছে।

কায়রোতে চুক্তি বাস্তবায়নের কৌশল নিয়ে একটি জয়েন্ট অপারেশন রুম গঠন করা হয়েছে।

গাজার পরিস্থিতি

হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৮৭০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছে এবং আরও ২৩ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গাজার অর্ধেকের বেশি হাসপাতাল অকার্যকর হয়ে পড়েছে।

ইসরায়েলের সামরিক অভিযান

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালায়।

পরিশেষে, এই চুক্তি ইসরায়েল ও গাজার মধ্যে চলমান সংঘাত নিরসনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলেও এর সফল বাস্তবায়ন অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। উভয়পক্ষের জন্য এটি একটি শান্তির সুযোগ, যা ভবিষ্যতের পথ তৈরি করতে পারে।

সংবাদটি শেয়ার করুন