ঢাকা | শনিবার
১৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৪ঠা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যাত্রী ‘পিটিয়ে’ নিজ বাহিনীতে ফিরলেন দুই বিমান সেনা

বাংলাদেশের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক টার্মিনালে বিদেশ থেকে আসা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইউরোপিয়ান এক নাগরিককে বেধড়ক মারধরের পর নিজ বাহিনীতে ফেরত নেওয়া হয়েছে বিমান বাহিনীর সদস্যকে।

তাদের নাম ও র‍্যাংক বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে সংবাদ সম্মেলনে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক। এবং ইতিমধ্যেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি এবং নিজ বাহিরে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে।

সিভিল এভিয়েশনের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করার জন্য ক্যাব সদর দপ্তরে ডাকা হয় এ সংবাদ সম্মেলন।

গত জানুয়ারি ৮ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নরওয়ের চারজন এবং বাংলাদেশের এক নাগরিককে হেনস্তা করা হয়েছে। এর মধ্যে নরওয়ের একজনকে মারধর করে রক্তাক্ত করা হয়েছে। বিমানবাহিনীর কুইক রেসপন্স ফোর্স (কিউআরএফ) এবং আনসার বাহিনীর সদস্যরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার রাত আটটার দিকে বিমানবন্দরের আগমনি ক্যানপি-২ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

বিমানবন্দরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর একটি সূত্র জানায়, মারধরের শিকার যাত্রীর নাম মোহাম্মদ সাইদ উদ্দিন। অন্য চারজন হলেন সাইদের বাবা গিয়াস উদ্দিন, মা বেগম মনোয়ারা, ভাই মোহাম্মদ মহি উদ্দিন এবং গিয়াস উদ্দিনের পুত্রবধূ ইপসা জান্নাতুল নাঈম। এই পাঁচজনকেই হেনস্তা করা হয়েছে।

বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে, এই পাঁচ যাত্রী নরওয়ে থেকে কাতারের দোহা হয়ে কাতার এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে (কিউআর-৬৩৮) ঢাকায় এসেছেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি ফেনীর সোনাগাজী।

ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে বিমানবন্দরের নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, যাত্রীরা বের হওয়ার সময় কিউআরএফ সদস্যরা তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। পরে এ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে দলগতভাবে আক্রমণ করে সাইদ উদ্দিনকে রক্তাক্ত করা হয়।

রাত সাড়ে ১১টার দিকে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক সিহাব কায়সার খান তখন বলেন, ‘দুই ছেলে, বাবা, মা, এক ভাইয়ের স্ত্রীসহ পরিবারের পাঁচ সদস্য নরওয়ে থেকে ঢাকায় আসেন। কোনো একটি স্থান থেকে তাঁদের সরে যেতে বলা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা থেকে এ ঘটনার সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি। পরে এক ছেলে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেলে আমরা আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’

এ ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কিউআরএফ ও আনসারের ১০ জনের মতো সদস্য চারদিক থেকে ঘিরে ধরে সাইদ উদ্দিনকে মারধর করছেন। এ সময় একজন নারী চিৎকার করে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন। অপর একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মারধরে সাইদের মুখমণ্ডল রক্তাক্ত হয়েছে। মুখের নিচে ও বাঁ চোখের পাশে রক্ত লেগে আছে।

বিষয়টি অত্যন্ত সমালোচনা সৃষ্টি করলে সিএএবি এর পক্ষ থেকে আম পুলিশ ব্যাটালিয়নের নেতৃত্বে পরিবর্তনের জন্য তদবির শুরু করা হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন