ঢাকা | মঙ্গলবার
২২শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৬ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাবিতে র‍্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর সংস্কার আন্দোলনের র‍্যালি ও সমাবেশ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) নবীন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে র‍্যাগিংমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতের দাবিতে র‍্যালি ও মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর সংস্কার আন্দোলন।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ রফিক-জব্বার হল থেকে র‍্যালিটি শুরু হয়ে মওলানা ভাসানী হল, বটতলা, আ ফ ম কামালউদ্দিন হল ও রেজিস্ট্রার বিল্ডিং সংলগ্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহিদ মিনারে এসে মানববন্ধনের মাধ্যমে শেষ হয়। 

র‍্যালিতে শিক্ষার্থীদেরকে ‘র‍্যাগিং এর বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘এসো নবীন ভয় নাই, জাহাঙ্গীরনগরে র‍্যাগ নাই’, ‘জাহাঙ্গীরনগর এর পক্ষ থেকে-লাল গোলাপ শুভেচ্ছা’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে শোনা যায়। 

র‍্যালি’র শুরুতে মানববন্ধনে জাবি সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক ইখতিয়ার মাহমুদ বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এতদিন ধরে একটি রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গণরুম কালচার চালু রেখে হলে হলে সিন্ডিকেট তৈরী করেছিল, যা অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গের কারণ। আমরা চাই, আর কখনো যেন কোন রাজনৈতিক দল এই ধরনের অপসংস্কৃতি গড়ে তুলতে না পারে। র‍্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার লক্ষ্যে আমাদের সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। এটি বন্ধ করতে প্রশাসনকে এগিয়ে আসতেই হবে।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম লিমন বলেন, ‘র‍্যাগিং কালচার বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পরিয়ে স্কুল-কলেজেও ছড়িয়ে পড়েছে। দেখা যেত একজন নবীন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে তাকে মুরগী নামে আখ্যা দেওয়া হয়। একটি মুরগী দেখলে শিয়াল যেমন ঝাপিয়ে পড়ে তেমনি সিনিয়ররা ঐ নবীন শিক্ষার্থীর ওপর কে কার চেয়ে বেশি র‍্যাগ দিতে পারে সেই যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। আমরা প্রশাসনের কাছে জানাতে চাই এই ধরনের কালচার যেন আর গড়ে উঠতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’

জাহাঙ্গীরনগর সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক ইয়াহিয়া জিসান বলেন, ‘একজন নবীন শিক্ষার্থী অনেক স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে। এরই মধ্যে তাদেরকে যে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, তা ছিল নজিরবিহীন। আমরা জুলাই বিপ্লবের পর একটি পরিবর্তন চেয়েছি, যেখানে নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা গণরুম ও র‍্যাগিং কালচার থেকে বেরিয়ে আসতে চাই।’

প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘র‍্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার লক্ষ্য এই ধরনের সময়োপযোগী আয়োজনকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছে যেন কোনো র‍্যাগিং না হয়। এর পাশাপাশি আমরা প্রক্টরিয়াল বডি সর্বদা সচেষ্ট আছি যেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটতে পারে। প্রক্টরিয়াল টিম আজ রাত থেকে শুরু করে আগামী ১০-১২ দিন করা নজরদারিতে রাখবে যেন র‍্যাগিং কালচার পুনরায় চালু না হয়।’

প্রসঙ্গত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীন শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম আগামীকাল রোববার থেকে শুরু হবে। এবার সব হলেই প্রথম বর্ষের সব শিক্ষার্থীর জন্য সিট নিশ্চিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

সংবাদটি শেয়ার করুন