ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আর একটা গুলি যেন না চলে, শিল্পীদের হুঁশিয়ারি

আর একটা গুলি যেন না চলে, শিল্পীদের হুঁশিয়ারি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ঝিরঝির বৃষ্টি পেরিয়েই আজ (৩ আগস্ট) দুপুরে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে হাজির হন দেশের সংগীতশিল্পীরা। কথা ছিল, রবীন্দ্রসরোবরে কনসার্ট হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে রবীন্দ্রসরোবর প্রাঙ্গণ।

এসময় শিল্পীরা ফেস্টুন হাতে দাঁড়াতেই শত শত শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতায় ভরে যায় প্রাঙ্গণ। শিল্পীরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। পরে তাঁরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গেই শহীদ মিনারের উদ্দেশ্যে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যান।

বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন (বামবা) আয়োজিত এই সমাবেশে গীতিকবি প্রিন্স মাহমুদ বলেন, ‘সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে। আপনারা বেরিয়ে আসুন। টিভিগুলোকে বলছি, একাত্তরে আপনাদের পূর্বসূরীরা কী দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এবার আমরা দেখতে চাই।’ এসময় প্রিন্স মাহমুদ প্রশ্ন রাখেন, ‘আপনারা কেন গতকাল গুলি চালাইলেন। আমার শহর খুলনায় কেন গুলি চলল, কেন? কেন রক্তে লাল হইলো। এই দুর্বিষহ অবস্থা কেন সৃষ্টি করলেন। আপনার কি মানুষ আছেন?’

এরপর টিপু বলেন, ‘১৬ বছর ধরে মিডিয়াতে মিথ্যাচার করা হয়েছে। আর লাভ নাই। এদেশের মানুষ সব জেনে গেছে। সত্য প্রকাশ করুন। ছাত্র-জনতাদের সঙ্গে থাকুন।’ বক্তব্যের মাঝে মাঝেই শিল্পী ও শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ ও ‘গেট আপ, স্ট্যান্ড আপ’ বলে স্লোগান তোলেন।

ব্যান্ড তারকা মাকসুদ বলেন, ‘একটু দেরি হলেও আমরা বামবার পক্ষ থেকে এসেছি। শুধু এতটুকু বলতে যে, আমরা ছাত্রদের সঙ্গে আছি। আমরা অন্যায় বন্ধ চাই। জুলুম বন্ধ চাই। আমরা র‍্যাপার হান্নানের মুক্তি চাই। আমরা জনতার কাছে বিচার চাই। যাদের ধরা হচ্ছে, তাঁরা আমাদের ভক্ত। তাঁদের ওপর কোনো জুলুম যেন না হয়।’

এসময় হামিন আহমেদ বলেন, ‘আর একটা গুলি যেন না চলে। একটা প্রাণও যেন না যায়। যাদের ধরা হয়েছে, তাঁদের যেন অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হয়।’

এ সময় শিক্ষার্থীরা শিল্পীদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন— এত দিন আপনারা কোথায় ছিলেন, যখন ছাত্রদের ওপর গুলি চালালো হলো? আপনারা ছাত্রদের ৯ দফার সঙ্গে আছেন কিনা? তখন অনেকে ভুয়া ভুয়া বলেও চিৎকার করেন। শিল্পীরা সবাইকে আশ্বস্ত করে জানান, তাঁরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আছেন। ৯ দফার সঙ্গেও একমত। এরপরে স্লোগান দিতে দিতে শিল্পী ও শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।

উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবরে প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ব্যান্ডতারকা, শিল্পী, গীতিকবি ও সুরকারসহ শোবিজের বিভিন্ন অঙ্গনের মানুষ। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানায় আর্টসেল, সোলস, দলছুট, শূন্য, মাইলস, মাকসুদ ও ঢাকা, শিরোনামহীন। উপস্থিত ছিলেন শিল্পী পার্থ বড়ুয়া, এলিটা, গীতিকবি লতিফুল ইসলাম শিবলী, শিল্পী আসিফ আকবর, আরমিন মুসা, মিফতাহ জামান, সুজিত মোস্তফা, নৃত্যশিল্পী মুনমুন আহমেদ, অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনসহ আরও অনেক সংগীতশিল্পী ও অভিনয়শিল্পী-নির্মাতারা।

সংবাদটি শেয়ার করুন