ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে ফিক্সিং, চার্জ গঠনের নির্দেশ

ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে ফিক্সিং, চার্জ গঠনের নির্দেশ

নয়াদিল্লির একটি আদালত ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে ফিক্সিংয়ের ঘটনায় চার্জ গঠনের আদেশ দিয়েছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত হয়েছেন ৪ জন। তাদের বিরুদ্ধে ২০০০ সালে হওয়া ম্যাচটিতে ষড়যন্ত্রমূলক অপরাধ ও প্রতারণার অভিযোগে এই চার্জ গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় ভারতীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, অভিযুক্ত চারজন হচ্ছেন রাজেশ কালরা, কৃষাণ কুমার, সুনীল দারা ও সঞ্জীব চাওলা। দিল্লির অতিরিক্ত প্রধান জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নেহা প্রিয়া চানাকায়া পুরি পুলিশ স্টেশনের আবেদনের ভিত্তিতে এই আদেশ দিয়েছেন। যেখানে চার্জে প্রমাণ হিসেবে কিছু ঘটনা, রেকর্ড করা আলোচনা, অভিযুক্তের আচরণ ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি যুক্ত করতে বলা হয়। কালরা, কুমার ও দারার মধ্যকার ফিক্সিংয়ের বিষয়ে একমত হওয়ার প্রমাণও পাওয়া গেছে বলে জানানো হয় সেখানে।

এছাড়া, আরেক অভিযুক্ত চাওলা দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়াত কিংবদন্তি হ্যান্সি ক্রনিয়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে চুক্তি করেছেন বলে জানা গেছে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদন বলছে, ইন্ডিয়ান পেনাল কোডের (আইপিসি) প্রতারণার ধারা ৪২০ এবং ষড়যন্ত্রমূলক ধারা ১২০-বি–এর অধীনে ফিক্সিংয়ের বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য পেয়েছেন আদালত। সেসব তথ্য বিসিসিআইয়ের অধীনে পরিচালিত টেস্ট ও ওয়ানডে ম্যাচে প্রতারণার ষড়যন্ত্র ও অসৎ উপায়ে সম্পদ প্রাপ্তির দিকে নির্দেশ করছে। ২০০০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ মার্চের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা-ভারত সিরিজে এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এভাবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কথোপকথন ও আলোচনার বিষয়ে প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণ সাপেক্ষে আদালতে ৬৮ পৃষ্ঠার একটি নথি দেওয়া হয়েছে। যেখানে বিস্তারিত তুলে ধরা হয় ম্যাচ ফিক্সিং, জুয়া, দলের অবস্থা, স্কোরের বিষয়ে অভিযুক্তদের সম্মতি ও আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে। ওই মামলায় পরবর্তী শুনানির জন্য ৩১ জুলাই দিন ধার্য করা হয়েছে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে ওই ফিক্সিং নিয়ে বলা হয়েছে, ২০০০ এপ্রিলে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ চলার সময়ে দিল্লি পুলিশ একটি কল রেকর্ড প্রকাশ করে। যেখানে প্রোটিয়া অধিনায়ক হ্যান্সি ক্রনিয়ের সঙ্গে ভারতের জুয়াড়ি সিন্ডিকেটের এক প্রতিনিধির কথোপকথন শোনা যায় বলে অভিযোগ তোলা হয়। সেখানে শোনা যায়, আফ্রিকার অফস্পিনার ডেরেক ক্রুকস এই সিরিজের কোনো একটি ম্যাচে শুরুতেই বল করবেন এবং হার্শেল গিবস ২০ রানের বেশি করবেন না বলে সম্মত হন ফোনের লাইনে থাকা দুই ব্যক্তি। প্রথম বোলিং পরিবর্তনের পর ক্রনিয়ে বল হাতে নেন, তিনি ৬৯ রান দেন সেই ম্যাচে পুরো দশ ওভার বল করে। তৃতীয় ম্যাচে ফরিদাবাদে হার্শেল গিবস ১৯ রানে আউট হন এবং শেষ ম্যাচে ডেরেক ক্রুকস বল হাতে ইনিংস উদ্বোধন করেছিলেন। ছয় ওভারে ৫৩ রান দিয়েছিলেন ক্রুকস এবং তাকে যখন বল করতে বলা হয় তখন তিনি হতভম্ব হয়ে যান। ওই সময় দিল্লির পুলিশ নিশ্চিত করে, গিবস, নিকি বোয়ে ও পিটার স্ট্রাইডমকেও সন্দেহ করা হচ্ছিল।

তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে হ্যান্সি ক্রনিয়ে সকল দায় অস্বীকার করেন। পরে আবার আরেকটি সাক্ষাৎকারে সেই দাবি পুরো সত্য নয় বলে জানান ক্রনিয়ে। এরপর আদালতে নিজের অপরাধ স্বীকার করা সাপেক্ষে হ্যান্সি ক্রনিয়েকে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট বোর্ড থেকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। পরে ২০০২ সালের ১ জুন এক বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান নায়ক থেকে খলনায়ক বনে যাওয়া ক্রনিয়ে।

সংবাদটি শেয়ার করুন