ঢাকা | রবিবার
২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুক্রবার সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে আন্দোলনকারীরা

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নতুন ঘোষিত এক দফা কর্মসূচি বাস্তবায়ন, আজকের আন্দোলনে বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল ৪টায় সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাতে শাহবাগে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।

কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামীকাল বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও হামলার স্থানে একযোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের আজকের মত সবসময় ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকতে হবে। এবার আমরা কোনো ফাঁদে পা দেবো না। চূড়ান্ত সমাধান নিয়েই এবার ঘরে ফিরবো। আমরা বলতে চাই, হাইকোর্টের সঙ্গে আমাদের আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের দাবি সরকার ও আইন বিভাগের প্রতি, কিন্তু তারা আদালতকে সামনে রেখে কথা ঘুরাচ্ছে। নিজেদের কাজ আদালতের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে। আমরা চাই, ৫ শতাংশ কোটা অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য রেখে জরুরি অধিবেশন ডেকে আইন পাস করা হোক।

এই আন্দোলনের সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থের দাবি। সব দল-মতের শিক্ষার্থীরা এখানে রয়েছে এবং আমরা ঐক্যবদ্ধ। এই জনদুর্ভোগের দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে। কারণ তারা আমাদের দাবি মেনে নেয়নি। আমরা জনদুর্ভোগ চাই না। আমরা চাকরি না পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চাকরি করতে পারবেন না। কিছু মিডিয়া ভুয়া তথ্য প্রকাশ করে আমাদের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। আমরা এর নিন্দা জানাই।

তিনি আরও বলেন, আজকে ঢাবিতে অছাত্রদের এনে ক্যাম্পাসের পরিবেশকে নষ্ট করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবির বিরুদ্ধে অছাত্রদের জড়ো করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার আবেদন জানাই।

কর্মসূচি ঘোষণা করে নাহিদ ইসলাম বলেন, আজকে সারাদেশে আমাদের আন্দোলনে হামলার প্রতিবাদে এক দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবং সংসদে জরুরি অধিবেশনের মাধ্যমে কোটা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য আগামীকাল দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় এবং হামলার স্থানে একযোগে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আংশিক রায়ে আদালত বলেছে সরকার কোটার পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করতে পারে। তাহলে সরকার কেন এতদিন ধরে আমাদের হাইকোর্ট দেখানোর চেষ্টা করছে? আমাদের এক দফা দাবি যৌক্তিক হলে আজকে আমাদের আন্দোলনে হামলা হলো কেন? সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নারীদের ওপর, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিয়ারশেল নিক্ষেপ, মওলানা ভাসানিতে লাঠিচার্জ এবং রাবিতে আন্দোকারীদের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। যারা এই হামলায় জড়িত তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। সমাধানের বিকল্প হামলা, মামলা ভয়, পাওয়ার পলিটিক্স হতে পারে না। আমাদের মামলা-হামলা করে থামাতে পারবেন না।

আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরেই রাজপথে নিজেদের দাবি আদায়ে আন্দোলন করে যাচ্ছি। এই দাবিটি সম্পূর্ণ যুক্তিযুক্ত। আজকে আন্দোলন থামাতে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। এর ফলে আমাদের সাংবিধানিক অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে।

এর আগে বেলা বিকেল ৫টায় শাহবাগসহ ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবরোধ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ফলে রাজধানীর প্রায় সব এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে রাত ৯টায় কর্মসূচি ঘোষণা করে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে গিয়ে আজকের কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটে।

এর আগে ৭ জুলাই ঘোষিত শিক্ষার্থীদের বর্তমান এক দফা দাবি হলো- সকল গ্রেডে সব ধরনের অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন