সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে মঙ্গলবার চাকরিপ্রার্থী কয়েকশ শিক্ষার্থী শাহবাগ মোড়ে অবরোধ করেছে। এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে তারা বিক্ষোভ মিছিল করেন।
মঙ্গলবার (০২ জুলাই) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে জড়ো হয়ে অবরোধ করে। প্রায় ঘণ্টাখানেক সেখানে অবস্থানের পর ৫টার দিকে শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে সরে যান।
এসময় অবরোধের কারণে বাংলামোটর থেকে শাহবাগ, শাহবাগ থেকে সায়েন্সল্যাব, কাকরাইল সড়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
সরকারি চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা শাহবাগ থেকে মিছিলটি নিয়ে বর্তমানে ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। এসময় এর অন্যতম সংগঠক নাহিদ ইসলাম গণমাধ্যমে বলেন, ৩০ জুন পর্যন্ত আমাদের আল্টিমেটাম ছিল। গতকাল থেকে আবার আমরা বিক্ষোভ শুরু করেছি। আগামী কয়েকদিন বিক্ষোভ চলবে। আন্দোলনের সংগঠক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ বলেন, আমরা কোটা বাতিলে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি করছি। সরকার যদি যৌক্তিকভাবে কোটা সংস্কার করতে চায়, তবে আমরা তা মেনে নেব। কিন্তু আমরা সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের বিষয়টি মানি না।
সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের ফলে বিক্ষোভে অংশগ্রহনকারীদের চারটি দাবি হলো-
১। ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকুরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে।
২। ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকুরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।
৩। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
৪। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
এদিন দুপুর আড়াইটার দিকে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন শত শত শিক্ষার্থী। তারা একটি মিছিল বের করে নীলক্ষেত থেকে কাঁটাবন মোড় পর্যন্ত যান। পরে মিছিলটি বিকেল পৌনে ৪টার দিকে শাহবাগ মোড়ে পৌঁছায়। বিক্ষোভকারীরা সেখানে পৌঁছার আগেই পুলিশের একটি দল অবস্থান নেয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেডের সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের ৩০ শতাংশ কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি এ সিদ্ধান্তকে হাইকোর্ট গত ৫ জুন অবৈধ ঘোষণা করে। এরপর শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। পরে ৯ জুন সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা পুনর্বহালে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করে সরকার।
