বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিন সকল প্রকার মৎস্য আহরনের নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সে হিসেবে আজ সোমবার (২০ মে) রাত ১২ থেকে শুরু হচ্ছে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকম। শেষ হবে ২৩ জুলাই।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক মাছের সংরক্ষণ ও প্রজননের লক্ষ্যে প্রতি বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। উপকূলীয় ভোলার চরফ্যাশনে ৭০ টি মাছ ঘাট, ১০১ টি আড়ত এর আওতায় মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন এখাকার বেশিরভাগ মানুষ।
সমুদ্রগামী ট্রলার, ফিশিং বোটের সংখ্যা ৪ হাজার ১২৯। নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ৪৭ হাজার ৩১১ জন। এদের মধ্যে ভিজিএফ এর আওতায় রয়েছে ১৯ হাজার ৫২১জন জেলে। এবং সমুদ্রগামী জেলের সংখ্যা ১৭ হাজার ৫৬১জন ।
উপজেলার সামরাজ, নতুন স্লুইস, খেজুর গাছিয়া ও চরকচ্ছপিয়া মৎস্য ঘাট ঘুরে স্থানীয় জেলেদের কাছ থেকে জানা যায়, নিষেধাজ্ঞার আগ মুহূর্তে সাগরে ইলিশের দেখা পাননি তারা। তাই সমুদ্র থেকে খালি হাতে ফিরছেন। এ অবস্থায় চরম হতাশায় দিন কাটছে তাদের।কারও কারও জালে অল্প কিছু মাছ ধরা পরলেও তা দিয়ে ট্রলারের তেল ও বাজার খরচ উঠেনি। এ অবস্থায় বেশ কিছুদিন ধরে চরম হতাশায় দিন কাটছে। নিষেধাজ্ঞাকালে টানা দুই মাসেরও বেশি সময় বেকার থাকতে হবে এসব জেলেদের।
চরফ্যাশন উপজেলার বেতুয়া নতুন স্লুইস মৎস্য ঘাটে মৎস্যজীবি মো. মফিজ মাঝি ও জেলে মো.মনোয়ার হোসেন জানান, প্রতি বছর নিষেধাজ্ঞার আগ মুহূর্তে যে মাছ ধরা পরে, তা বিক্রি করে বেকার সময়ের জন্য সঞ্চয় হিসেবে রাখা হয়। কিন্তু এবার অনাবৃষ্টির কারণে অনেক দিন ধরে মাছ না পাওয়ায়, সঞ্চয় তো দূরের কথা উল্টো ঋণগ্রস্ত হতে হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার দীর্ঘ সময় কি দিয়ে সংসার চলবে তা চিন্তিত জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা। তাই নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা কমিয়ে দেয়ার দাবি তাদের।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার বলেন, বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা বন্ধের কারণে যাতে জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত না হন সেদিকেও নজর দিচ্ছে সরকার। ক্ষতিগ্রস্ত জেলে পরিবারকে ভিজিএফ কার্ড চাউল দেওয়া হবে। এবং এসব জেলেরা রেশনিং সুবিধা পাবেন। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে খাদ্য সহায়তা হিসেবে নিবন্ধিত প্রতি জেলেকে ৮৬ কেজি করে চাল দেয়া হবে।