ফেসবুকে ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বরখাস্তকৃত শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াৎ আদালতে আসামির উপস্থিতিতে এই রায় দেন। ট্রাইব্যুনাল একজন প্রবেশন কর্মকর্তার অধীনে তিথি সরকার এক বছর নিজ বাড়িতে প্রবেশনে থাকবেন বলেও জানান।
জানা যায়, এই সময়ে তাকে আদালতের দেওয়া আটটি শর্ত পালন করতে হবে এবং একজন প্রবেশন কর্মকর্তা তার তত্ত্বাবধান করবেন। এসময় প্রবেশন অফিস তিথি সরকারের বিষয়ে সন্তোষজনক প্রতিবেদন দিলে আদালত তার শাস্তি পুনর্বিবেচনা করবে বলেও জানা যায়। এ বিচার চলাকালে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ছয় জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।
২০২১ সালের ৪ নভেম্বর তিথির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। ওই দিন ট্রাইব্যুনাল তিথির স্বামী শিপলু মল্লিককে মামলার নথি ও অন্যান্য বিষয় যাচাই-বাছাই করে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন। তারও আগে, ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর নরসিংদীর মাধবদী এলাকা থেকে তিথিকে ও রাজধানীর কাপ্তান বাজার এলাকা থেকে শিপলুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ২০২০ সালের ২ নভেম্বর পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এরপর ২০২১ সালের ১৯ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপ-পরিদর্শক মেহেদী হাসান ওই দম্পতির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৩ অক্টোবর তিথির ফেসবুক পোস্ট ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা মন্তব্যের কিছু স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনার পর জবি শিক্ষার্থীরা শাস্তির দাবির জানায়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ২০২০ সালের ২৩ অক্টোবর ছাত্র অধিকার পরিষদের জবি শাখার দপ্তর সম্পাদকের পদ থেকেও তিথিকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। ওই দিনই তিনি তার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছে দাবি করে পল্লবী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিথি।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৬ অক্টোবর তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।