ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের পর ইউরোপেও চাপের মুখে টিকটক

যুক্তরাষ্ট্রের পর ইউরোপেও চাপের মুখে টিকটক

যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার ইউরোপেও চাপের মুখে পড়তে যাচ্ছে টিকটক। ইতিমধ্যে মার্কিন কংগ্রেস চীনা মালিকানার অ্যাপ টিকটকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ প্রস্তুত করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও অ্যাপের লাইট সংস্করণের কারণে কম বয়সিদের ক্ষতির আশঙ্কায় কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছে।

বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক। এই অ্যাপ অসংখ্য কনটেন্ট ক্রিয়েটরের আয়ের উৎসও। তবে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে। একই পথে হাঁটছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও।

এদিকে কয়েক মাসের জটিলতার পর গত শনিবার মার্কিন পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ যখন ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার প্রস্তাব অনুমোদন করলো, সেই ঘটনা সংবাদ শিরোনাম দখল করেছিল৷ তবে একই অধিবেশনে মার্কিন পার্লামেন্ট টিকটকের চীনা মালিক বাইটড্যান্স কোম্পানিকে সতর্ক করে দিয়েছে ৷ এক বছরের মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানটি টিকটকের মালিকানা হস্তান্তর না করলে জাতীয় পর্যায়ে সেটি নিষিদ্ধ করার হুমকি দিয়েছে পার্লামেন্টের প্রতিনিধি পরিষদ। উচ্চকক্ষ সিনেটেও বিলটি অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে ৷

এছাড়া, অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা সত্ত্বেও টিকটকের প্রশ্নে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট দলের মধ্যে যথেষ্ট ঐকমত্য দেখা যাচ্ছে৷ টিকটকের মাধ্যমে চীনের সরকার যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব খাটাতে পারে বলে মার্কিন রাজনৈতিক নেতারা মনে করছেন৷ ফলে জাতীয় স্বার্থে এই প্রশ্নে কড়া অবস্থান নেওয়ার জন্য চাপ বাড়ছে ৷

এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নও টিকটকের প্রশ্নে আরও কড়া অবস্থান নিচ্ছে৷ ইউরোপেও চীনের অযাচিত প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা কাজ করছে৷ আপাতত টিকটক লাইট রিওয়ার্ড প্রোগ্রাম বাতিল করার পথে এগোতে পারে এই রাষ্ট্রজোট ৷ শিশু-কিশোরদের নেশার আশঙ্কা দূর করতে টিকটকের মূল প্রতিষ্ঠান যথেষ্ট পদক্ষেপ না নিলে বৃহস্পতিবারই সেই কর্মসূচি বন্ধ করা হতে পারে৷ ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট নামের আইনকে হাতিয়ার করে ইইউ ক্ষতিকর ও বেআইনি কনটেন্ট মোকাবিলার চেষ্টা করছে৷ টিকটক অবশ্য ইইউ’র হুমকি সম্পর্কে হতাশা প্রকাশ করে জানিয়েছে, ১৮ বছরের কমবয়সীদের জন্য রিওয়ার্ডস হাব বন্ধ রাখা হয়েছে৷ ফলে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ থাকার কথা নয়৷ গত ফেব্রুয়ারি মাসে টিকটকের বিরুদ্ধে অন্য একটি তদন্ত শুরু হয়েছে ৷

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে টিকটক ব্যবহারকারীদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ মত প্রকাশের অধিকারের দোহাই দিয়ে নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করছে৷ চীনের কোম্পানি হওয়া সত্ত্বেও টিকটক একই কারণে সংশয় প্রকাশ করছে৷ অ্যাটলান্টিকের দুই প্রান্তের অনেক রাজনৈতিক নেতা ও দল প্রচারের স্বার্থে টিকটক ব্যবহারও করছে৷ এখনই পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞার পথে না গেলেও ইইউ টিকটকের উপর চাপ বজায় রাখছে৷ এমন পরিস্থিতিতে টিকটক যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজার ধরে রাখতে অদূর ভবিষ্যতে সত্যি মালিকানা হস্তান্তর করবে কিনা, সে বিষয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে ৷ খবর: রয়টার্স, এএফপি

সংবাদটি শেয়ার করুন