লিবিয়া থেকে সাগরপথে ইউরোপ যাত্রাকালে তিউনিসীয় উপকূলে নৌযানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৯ অভিবাসী মারা গেছেন। এদের অধিকাংশই বাংলাদেশি নাগরিক বলে জানিয়েছে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস।
ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাস স্থানীয় সময় শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছে।
দূতাবাস জানায়, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি লিবিয়া উপকূল থেকে ৫২ জনের একদল অভিবাসী সাগরপথে ইউরোপ যাত্রাকালে তিউনিসীয় উপকূলে তাদের বহনকারী নৌকাটিতে অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
এ ঘটনার পর তিউনিসিয়ার নৌবাহিনী নৌকাটি থেকে ৯ অভিবাসীর মৃতদেহ এবং ৪৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করে। জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন এবং তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশংকাজনক। দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণকারী অধিকাংশই বাংলাদেশি নাগরিক বলে জানা গেছে।
দূতাবাস জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা এবং চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে দূতাবাস তিউনিসিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং আইওএমের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছে। এ ছাড়া স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎপূর্বক তাদের কল্যাণ নিশ্চিতকরণ এবং মৃত্যুবরণকারী বাংলাদেশিদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে দূতাবাসের একটি টিমকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তিউনিসিয়া পাঠানোর সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার তথ্যমতে বিভিন্ন দেশের উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার চেষ্টাকালে ২০২৩ সালে তিন হাজারেরও বেশি অভিবাসী মৃত্যুবরণ করেছেন এবং নিখোঁজ হয়েছেন। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ অবৈধ অভিবাসনের বিষয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। লিবিয়া ও তিউনিসিয়ার নৌবাহিনী তাদের উপর কঠোর নজরদারি জোরদার করেছে। ফলে বর্তমানে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাত্রা অত্যন্ত বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ।
বাংলাদেশ দূতাবাসও ঝুঁকি নিয়ে এভাবে ইউরোপ যাত্রা না করতে বাংলাদেশি অভিবাসীদের সতর্ক করেছে। দূতাবাস বলছে, দালাল ও পাচারকারীদের প্ররোচনা-প্রতারণায় পড়ে জীবনের ঝুঁকি না নেওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। এ ছাড়া লিবিয়ায় কর্মরত/বসবাসরত প্রবাসীদের বর্ণিত বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশে অবস্থানরত তাদের আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতদেরকেও সতর্ক করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।