ভারতে আতঙ্ক ছড়ানো করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশেও শনাক্ত ফলে দেশে করোনার সংক্রমণ আবারও বেড়ে যাওয়ায় দ্রুত টিকা দিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এখন পর্যন্ত পাঁচজনের নমুনা পরীক্ষায় জেএন.১ উপধরন শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তদের মধ্যে এই মুহূর্তে ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের রোগী আছেন। তবে তাদের মধ্যে কারও দেশের বাইরে থেকে আসার কোনো হিস্ট্রি নেই। তারা দেশেই ছিলেন। তারা প্রত্যেকেই ভালো আছেন। এ নিয়ে উদ্বেগের কিছুই নেই।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) অধিদফতরের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স বিভাগের সদস্য সচিব ডা. মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন দেশে করোনা টিকা নিয়ে নতুন নির্দেশনার তথ্য জানিয়েছেন।
ডা. মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জানান, বুধবার (১৭ জানুয়ারি) এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সংশ্লিষ্ট সবাইকে পাঠানো হয়েছে। ওই চিঠিতে বলা হয়, দেশব্যাপী করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। এ জন্য ফাইজার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কার্যক্রমের প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ (তৃতীয়, চতুর্থ ডোজ) বিতরণ এবং টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই টিকাদান কার্যক্রম শুরু করতে হবে।
চিঠিতে বলা হয়, ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে সম্মুখ সারির স্বাস্থ্যকর্মী, ৬০ বছর এবং এর বেশি বয়সী জনগোষ্ঠী, দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত ১৮ বছর এবং তার চেয়ে বেশি বয়সী জনগোষ্ঠী, স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রাপ্তবয়স্ক (১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী) জনগোষ্ঠী এবং অন্তঃসত্ত্বা নারীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে।
প্রাথমিক পর্যায়ে রাজধানীর আটটি কেন্দ্রে বুস্টার ডোজ ফাইজার ভিসিভি ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। কেন্দ্রগুলো হলো— বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ফুলবাড়িয়া সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল। পরে ধাপে ধাপে ঢাকার বিভিন্ন বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট ও সরকারি হাসপাতাল, ঢাকার বাইরের সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে ভ্যাকসিন বিতরণের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
এছাড়াও, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের ক্ষেত্রে ফাইজার আরটিইউ ভ্যাকসিন ব্যবহার করতে হবে। প্রাথমিকভাবে মহাখালীর ডিএনসিসি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নয়াবাজারে ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালে এই টিকা দেওয়া হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেওয়ার প্রমাণস্বরূপ ভ্যাকসিনের নাম এবং তারিখ উল্লেখ করে টিকা কার্ড সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে দিতে হবে। তৃতীয় ও চতুর্থ ডোজের ক্ষেত্রে সুরক্ষা ওয়েবসাইট অথবা অ্যাপ থেকে ডাউনলোড করে সঙ্গে আনতে হবে টিকাকার্ড। স্বাস্থ্য অধিদফতরে পূর্ব নির্ধারিত উপায়ে কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিনেশনের রিপোর্ট দিতে হবে।
