গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরের এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল বাবদ ১২৭ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও কমে দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলারে। আর বিপিএম-৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী, রিজার্ভ ২০ দশমিক ৫ বিনিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
মঙ্গলবার (০৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মেজবাউল হক জানান, আকু বিল ১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন (১২৭ কোটি) ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। এখন মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলারে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছরজুড়ে ডলার সংকটের সঙ্গে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কম ছিল। ফলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধারাবাহিক কমেছে। তবে বছরের শেষ সময় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ (আইএমএফ) বিভিন্ন আর্থিক সহযোগী সংস্থার ঋণ পাওয়ায় রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছিল। নতুন বছরের শুরুতে আকুর বিল পরিশোধের কারণে আবারও রিজার্ভ কমেছে।
দেশের রিজার্ভ: গত বছর শেষে মোট রিজার্ভ বেড়ে ২ হাজার ৭০০ কোটি ডলার হয়েছিল। আকুর বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ২৫ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। সারা বিশ্বে প্রচলিত ও বহুল ব্যবহৃত আইএমএফের ব্যালেন্স অব পেমেন্টস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম ৬) অনুযায়ী, রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার; এটি কমে হয়েছে ২০ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার।
প্রসঙ্গত আকু হলো একটি আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। ইরানের রাজধানী তেহরানে আকুর সদর দপ্তর। এ ব্যবস্থায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি দুই মাস অন্তর আমদানির অর্থ পরিশোধ করে।
এছাড়াও ডলার সংকট কাটাতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ থেকে ধারাবাহিক ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস (জুলাই-ডিসেম্বর) সময়ে ৬৭০ কোটি (৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন) ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সময়ে বাণিজ্যিক কিছু ব্যাংক থেকে এক বিলিয়ন ডলারের মতো কেনে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছিল। আর আগের অর্থবছরে (২০২১-২২) ডলার বিক্রি করেছিল ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন।