দেশের আলোচিত ব্যবসায়ী আদম তমিজী হকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মানহানির মামলায় জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করেছেন আদালত। সেইসঙ্গে গ্রেফতারের ১৫-২০ দিনের মধ্যেও তমিজি হককে কেন আদালতে হাজির করা হয়নি তা জানতে চেয়েছেন বিচারক।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরফাতুল রাকিবের আদালত এই আদেশ দেন।
তবে আসামির শুনানি চলাকালীন সময়ে আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আদম তমিজী হকের পক্ষে তার আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, আদম তমিজী হক একজন মানসিক রোগী। মানসিক ইনস্টিটিউট বিকন পয়েন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত ১১ ডিসেম্বর তাকে গ্রেফতার করা হয়। মানসিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারায় তাকে সেখানেই চিকিৎসাধীন রাখা হয়। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে আদালতে হাজির করতে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট ইস্যুর আবেদন করা হয়। আদালত তা মঞ্জুর করেন।
এসময় আদালত জানতে চান, তাকে কি চিকিৎসাধীন অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়? আইনজীবী জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। তখন আদালত জানতে চান, কোর্টে না এসে তিনি কীভাবে সেখানে ছিলেন? আইনজীবী জানান, তাকে আদালতে আনা সম্ভব ছিল না। আদালত বলেন, বাংলাদেশের একটা সংবিধান আছে। তাহলে সংবিধান ছিড়ে ফেলেন। গ্রেফতার হওয়ার পর ১৫/২০ দিনের মধ্যেও আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়নি। এতদিন সেখানে কীভাবে থাকেন, দেশে কি আইন-আদালত নাই? এরপর আদালত আদম তমিজী হকের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে দেন। এ নিয়ে আসামী পক্ষের আইনজীবী জানান, আইনের ব্যত্যয় ঘটায় আদালত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য,গত ৪ জানুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একইসঙ্গে জামিন শুনানির জন্য বুধবার (১০ জানুয়ারি) তারিখ ধার্য করেন। জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন কথা পোস্ট করেছিলেন আদম তমিজী হক। এ কারণে তার বিরুদ্ধে ডিএমপির দক্ষিণখান থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল। গ্রেফতারের পর তার আচরণ ও কথাবার্তায় সুস্থতার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। ‘মাদকাসক্ত’ হওয়ায় তাকে মাদক নিরাময়কেন্দ্র বা রিহ্যাবে পাঠানো হয়েছে চিকিৎসার জন্য। রিহ্যাবে ভর্তি করিয়ে বিষয়টি আদালতকে জানানো হয় যে, তার এলোমেলো কথাবার্তায় ডিবির মনে হয়েছে তার চিকিৎসার প্রয়োজন। পরবর্তীকালে আদালতের নির্দেশে জাতীয় মানসিক হাসপাতালে তাকে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। মানসিক হাসপাতালে ৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে একটি বোর্ড গঠন করা হয়।
ডিবি গত ১০ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর গুলশানের নিজ বাসা থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদম তমিজী হককে আটক করে।