ঢাকা | শনিবার
১৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুষ্ক মৌসুমে মেঘনার ভাঙন

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মেঘনার আকস্মিক ভাঙনে কবলিত হচ্ছে সাহেবের হাট ও চর কালকিনি ইউনিয়নের শত শত বাসিন্দারা। ঝুঁকিতে রয়েছে উপজেলা বেশ কয়টি ইউনিয়নের বাড়ি-ঘর, বসতি জমি ও ফসলি মাঠ। গত তিনযুগেরও বেশি সময় ধরে ভাঙন চলছে। পুরানো বাপ-দাদার কবর ও বিবিন্ ঐতিহাসিক স্থাপনা মুহুর্তে বিলিন হতে চলছে। ভাঙনে বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি হারিয়ে হাজার হাজার পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে বিচ্ছিন্ন জীবন-যাপনে দিন পার করছে। প্রতিটি মুহুর্তে মেঘনার জোয়ারের পানি লোকালয়ে ডুকে নষ্ট করছে কোটি টাকার সম্পত্তি ও বাড়ি-ঘর। ভাঙন থামছে না।

স্থানীয়দের দাবি, মেঘনার ভয়াবহ ভাঙনে উপজেলার সাহেবের হাট প্রায় বিলিন হয়ে গেছে। মাত্র কিছু অংশে ৪নম্বর ওয়ার্ড রয়ে গেছে। সাহেবের হাট ইউপি’র হাজার হাজার মানুষ সব কিছু হারিয়ে বিপন্ন-দিশেহারা। উপজেলার মানচিত্রে সাহেবের হাট এলাকাটি নাম মাত্র রয়ে গেছে। এছাড়াও উপজেলার চর কালকিনি, চর ফলকন ও পাটোয়ারী হাটে ভাঙন চলছে। উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার পরিবার ভিটে-মাটি হারিয়ে জীর্ণ-শীর্ণ জীবন-যাপন করছে। এদের বেশির ভাগই আশ্রয়হীন রাস্তা ও বিভিন্ন সড়কের পাশে কোনমতে টংঘর করে বেঁচে রয়েছে।

স্থানীয়রা আরও জানান, বর্ষায় পানি মুহুতে লোকালয়ে ডুকে পড়ে। দিন-রাত জেগে থাকতে হয়। ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মানে বরাদ্দ হয়েছে তবে কাজ হচ্ছে না। ঠিকাদারগন কাজের উদ্বোধনের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়ে চলে যাওয়ার পর সাইনবোর্ড গুলো কয়েকবার নদী গর্ভে চলে যায়। তারপরও বাঁধের কাজ করেনি। বাঁধের কাজ না হলে সাহেবের হাটে য অংশটুকু রয়েছে সেটাও নদী গর্ভে চলে যাবে।

গত বছরের সরকার একনেকে প্রায় ৩১ শত কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। প্রায় দেড় বছর পরে কিছু ঠিকাদার কাজ শুরু করে। তবে কাজের মান নিয়ে নানা প্রশ্ন জনমতে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে কাজ চলছে।

উপজেলার মতিরহাট থেকে পাটোয়ারীহাট এলাকায় নদী বাঁধ রোধে কাজ চলছে। তবে কাজের গতি ন ড় ব ড়..।

উপজেলার চর কালকিনি ইউপির চেয়ারম্যান মো.ছাইফ উল্লাহ জানান, মেঘনার ভাঙন তো গত ত্রিশ বছর হচ্ছে। তার ইউনিয়নে একাধিক কাচাঁসড়ক, স্থাপনা ও ফসলি জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। হাজার হাজার পরিবার ভিটে-মাটি হারিয়ে নিঃস্ব জীবন-যাপন করছে। প্রায় ৫হাজান পরিবার রাস্তার কোলে ঝুপড়ি ঘর করে জীবন অতিবাহিত করছে। ভাঙন রোধে বাঁধের কাজ চলছে। তবে কাজের গতি দ্রুত না হলে পুরো ইউনিয়ন ভেঙে যাবে।

উপজেলার সাহেবের হাট ইউপির চেয়ারম্যান মাষ্টার আবুল খায়ের জানান, উপজেলা মানচিত্র থেকে সাহেবের হাট হারিয়ে যাচ্ছে। মাত্র কিছু এলাকা বিদ্যমান রয়েছে। যেকোন মুহুর্তে ইউনিয়ন পরিষদ বিলিন হয়ে যাবে। বাঁধের কাজের মান উন্নত করে দ্রুত কাজের গতি বাড়াতে হবে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা প্রকৌশলী নাহিদুজ্জামান জানান, মেঘনার ভাঙন রোধে বাঁদ নির্মান ও কাজের গতি বৃদ্ধি করতে ঠিকাদারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত কাজের মান উন্নত হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন