অব্যাহত অভিযানের মুখে কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। দেশের অন্যতম বৃহত্তম পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি প্রায় ১০০ টাকা কমেছে।
খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা দরে। অথচ শনিবারও (৯ ডিসেম্বর) প্রতি কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়।
হঠাৎ করেই ভারত থেকে আমদানি বন্ধের ঘোষণায় দেশের বাজারে অস্থির হয়ে ওঠে পেঁয়াজের দাম। সরবরাহ ও মজুত স্বাভাবিক থাকলেও হঠাৎ অসাধু সিন্ডিকেটের কারণে পেঁয়াজের দাম একদিনের ব্যবধানে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়ে যায়। পরে পেঁয়াজের দামের লাগাম টানতে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল নড়েচড়ে বসে।
দেশজুড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ভোক্তা অধিদপ্তর অভিযানে নামে। সেই ধারাবাহিকতায় খাতুনগঞ্জে অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে জরিমানার পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়। একইসঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ১২০ টাকা করে পেঁয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়।
পেঁয়াজের দাম নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সোমবার (১১ ডিসেম্বর) মিটিং করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। সভায় পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে এরইমধ্যে দুইদিনে আমদানি করা হয় ২২৬ টন পেঁয়াজ। রোববার (১০ ডিসেম্বর) চীন থেকে আনা ১৬৮ টন এবং সোমবার (১১ ডিসেম্বর) পাকিস্তান থেকে আনা ৫৮ টন পেঁয়াজ খালাসের জন্য ছাড় দেয় উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র। এ বিষয়ে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, খাতুনগঞ্জে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পেঁয়াজ ঢুকছে। এমনিতে পেঁয়াজ সরবরাহ ও মজুত স্বাভাবিক রয়েছে। তাছাড়া প্রশাসনের তৎপরতাও বেড়েছে। সবমিলিয়ে কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। সামনে আর বাড়ার সম্ভাবনাও নেই।
প্রসঙ্গত, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক রাখতে পণ্যটি রপ্তানির ওপর আগামী মার্চ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। গত ৮ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া এ নিষেধাজ্ঞা আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছে ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড। এর আগে, গত ২৯ অক্টোবর প্রতি টন পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য ৮০০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে দেশটি। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বলবৎ রাখার পরিকল্পনা করা হয়। তবে এর মধ্যেই পেঁয়াজ রপ্তানিতে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।