ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৭২ হাজার টন সার আত্মসাতের ঘনায় জামিন পেলেন সাবেক এমপি পোটনসহ ৫ জন

৭২ হাজার টন সার আত্মসাতের ঘনায় জামিন পেলেন সাবেক এমপি পোটনসহ ৫ জন

৭২ হাজার টন সার আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় নরসিংদী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পোটন ট্রেডার্সের মালিক কামরুল আশরাফ খান পোটনসহ পাঁচজনকে জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে।

বুধবার (০৬ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অবকাশকালীন বিচারক ফয়সাল আতিক বিন কাদের তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।

জামিন পাওয়া অন্য আসামিরা হলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পোটন ট্রেডার্সের মহাব্যবস্থাপক মো. শাহাদত হোসেন নিপু ও মো. নাজমুল আলম বাদল, পোটন ট্রেডার্সের উত্তরবঙ্গ প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন এবং খুলনা ও নওয়াপাড়ার প্রতিনিধি মো. আতাউর রহমান। সকালে তারা আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। দুপুরে শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।

ঢাকার আদালতে দুদকের সহকারী পরিচালক (প্রসিকিউশন) আমিনুল ইসলাম জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জামিনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে তারা হাইকোর্টে আবেদন জানাবেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৬ নভেম্বর কামরুল আশরাফসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত কার্যালয়-১ এ প্রায় ৫৮২ কোটি টাকার সরকারি সার (৭২ হাজার টন) সরবরাহ না করে আত্মসাতের অভিযোগে সংস্থাটির উপপরিচালক মো. রফিকুজ্জামান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ১০ দিনের মাথায় তাদের জামিন দেওয়া হয়। আদালত সূত্রে জানা গেছে, আর আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শাহিনুর রহমান। দুদকের বিশেষ পিপি মোশারফ হোসেন কাজল জামিনের আপত্তি করেন। কিন্তু আপত্তি অগ্রাহ্য করে আদালত জামিন মঞ্জুর করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের বিদেশ হতে ইউরিয়া সার সরবরাহের জন্য আমদানি করলেও চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে চুক্তিকৃত বাফার গুদামে না দিয়ে ৫৮১ কোটি ৫৮ লাখ ৯ হাজার ৬৪ টাকার ৭১ হাজার ৮০১ টন ৩১ কেজি সার আত্মসাৎ করেছেন। কামরুল আশরাফ খানের (পোটন) মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পোটন ট্রেডার্স ৫০ দিনের মধ্যে সার গুদামে পৌঁছে দেওয়া কথা ছিল। সেটা না করে সার ট্রানজিটে রয়েছে বলে বিসিআইসিকে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়। এতে আরও বলা হয়, দুদক অনুসন্ধান করে জানতে পেরেছে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে জিটুজি চুক্তির আওতায় মধ্যপ্রাচ্যের তিনটি দেশ সৌদি আরব, দুবাই ও কাতার থেকে আমদানি করা ইউরিয়া সার পরিবহনের জন্য বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের সঙ্গে স্থানীয় প্রতিনিধি মেসার্স পোটন ট্রেডার্স এবং প্রিন্সিপাল ড্রাই বাঙ্ক শিপিং (প্রা.) লিমিটেডের মোট ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৫.৫৩০ টন ইউরিয়া সার বিভিন্ন গুদামে সরবরাহ দেওয়ার জন্য মোট ১৩টি স্থানীয় পরিবহন চুক্তি সই হয়। যার মধ্যে ৩৭টি চুক্তির অধীনে আশরাফ খানের (পোটন) মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পোটন ট্রেডার্স ২ লাখ ১৫ হাজার ৩৭৭.৫৬৬ টন ইউরিয়া সার বুঝে নিয়ে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭৬.২৫৮ টন ইউরিয়া সার সরবরাহ করা হলেও ৭১ হাজার ৮০১ টাকা ৩১ টন ইউরিয়া সার সরবরাহ না করে আত্মসাৎ করেন। ট্রানজিটে থাকা অসরবরাহ করা ইউরিয়া সার দ্রুত সরবরাহ দেওয়ার জন্য মেসার্স পোটন ট্রেডার্সকে ধারাবাহিকভাবে পত্র এবং তাগিদ পত্রসহ মোট ৪৩টি পত্র দেওয়া হয়েছিল। বিসিআইসি গঠন করা তদন্ত কমিটিতেও অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। ২০২১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুলাইয়ের ওই আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছিলো।

সংবাদটি শেয়ার করুন