ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্রীলঙ্কার দুঃস্বপ্নময় রেকর্ড হার, সেমিফাইনালে ভারত

শ্রীলঙ্কার দুঃস্বপ্নময় রেকর্ড হার, সেমিফাইনালে ভারত

ভারত-শ্রীলঙ্কার ম্যাচটি দেখে দর্শকরা ভাবতে পারেন এটি বিশ্বকাপ নয় বরং এশিয়া কাপের ফাইনাল! শুনতে অবাক লাগলেও বিশ্বকাপের আগেই ঘরের মাঠে হওয়া ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাত্র ৫০ রানে অলআউটের লজ্জায় ডুবে লঙ্কানরা। এবার তারই যেনো পুন:মঞ্চায়ন হলো বিশ্বকাপে। ভারতের দেওয়া ৩৫৭ রানের জবাবে মাত্র ৫৫ রানেই গুঁড়িয়ে গেছে লঙ্কানদের ইনিংস। যা বিশ্বকাপ ইতিহাসে দ্বিতীয় বড় হার (৩০২ রান)।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে ঝড় তুলেছিলেন বিরাট কোহলি ও শুভমান গিলরা। যদিও দুজনেই আউট হয়েছেন সেঞ্চুরি থেকে কয়েক কদম দূরত্বে। এরপর শেষদিকে শ্রেয়াস আইয়ারও ম্যাজিক ফিগারের আশা জাগিয়ে ফিরে যান। কিন্তু ততক্ষণে ভারত বড় সংগ্রহ পেয়ে যায়। বিপরীতে লঙ্কান পেসার ‍দিলশান মাদুশঙ্কা ৫টি উইকেট শিকার করেন।

লঙ্কানদের জন্য একেবারে অবিশ্বাস্য কিংবা দু‍:স্বপ্নময় সময় শুরু হয় লক্ষ্য তাড়ায় নেমেই! ৩৫৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় লঙ্কানরা ক্রিজে দাঁড়াতেই পারেনি। তাদের ৫ ব্যাটারই আউট হন রানের খাতা খোলার আগে। দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেন মাত্র ৩ ব্যাটার। বিপরীতে উইকেট শিকারে প্রতিযোগিতা করেছেন ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ শামি ও মোহাম্মদ সিরাজরা। তবে সেই দৌড়ে সেরা শামি। ভারতের হয়ে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট পাওয়ার দিনে ডানহাতি পেসার মাত্র ১৮ রান খরচায় নেন ৫ উইকেট। এছাড়া ১৬ রানে সিরাজ ৩ উইকেট এবং একটি করে শিকার করেন জসপ্রিত বুমরাহ ও রবীন্দ্র জাদেজা। সর্বশেষ এশিয়া কাপের ফাইনালের ভারতের কাছে শোচনীয় হারের ‘ট্রমা’ থেকে হয়তো এখনও বের হতে পারেননি কুশল মেন্ডিসরা। প্রায় একই কায়দায় আজও তারা উইকেটে এসে যেন অন্ধকার দেখেছেন।

বুমরাহ’র করা একেবারে প্রথম বল থেকেই শুরুটা হয়। তার করা কিছুটা আউট সুইং হওয়া বলটিতে ক্রস ব্যাট চালান লঙ্কান ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। খালি চোখেই স্পষ্ট আউট দেখতে পাওয়া সত্ত্বেও অতি আত্মবিশ্বাসে রিভিউ নেন তিনি। কিন্তু তাতে আর তার ভাগ্য বদল হয়নি। ফিরতে হয় গোল্ডেন ডাক খেয়েই। এরপর দ্বিতীয় ওভারেও সিরাজের প্রথম বলেই লেগ বিফোরের ফাঁদে আরেক ওপেনার দিমুথ করুণারত্নে। তিনিও খেয়েছেন গোল্ডেন ডাক। সিরাজের ওভারে মাত্র চার বলের ব্যবধানে ফিরেন সাদিরা সামারাবিক্রমাও। ৪ বলে রানের খাতা খোলার আগেই সিরাজের বলে স্লিপে থাকা আইয়ারকে ক্যাচ দেন। দলের এমন বিপর্যয়ে রান পেতে বেশ সংগ্রাম করছিলেন লঙ্কান দলপতি কুশল মেন্ডিস। ১০ বলে এই ডানহাতি ব্যাটার ১ রান করেন। এরপর সিরাজের সুইং হওয়া বলটি তার স্টাম্প উড়িয়ে দেয়। লঙ্কান ইনিংসের বাকি গল্পটা শামির লেখা। বোলিং তোপে শেষ ৬ উইকেটের পাঁচটিই গেছে শামির দখলে। বিশ্বকাপের প্রথম চার ম্যাচে ডাগআউটে কাটানো এই পেসার যেন সুদে-আসলে সব পরিশোধ করতে নেমেছেন। তিন ম্যাচের মধ্যেই তিনি দুবার ফাইফার (৫ উইকেট) পেয়েছেন। আরেক ম্যাচে তার শিকার ৪টি। সবমিলিয়ে তিন ম্যাচে ১৪ উইকেট শামির পকেটে। গতি ও সুইংয়ের মিশেলে তিনি ব্যাটারদের তটস্থ করে রাখার কৌশল আয়ত্ত করেছেন।

লঙ্কানদের টপ ও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতার মাঝে অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস একমাত্র দুই অঙ্কের রানে পৌঁঁছান। ২৫ বলে তিন ১২ রান করেন। ২৯ রানে আট উইকেট হারিয়ে লঙ্কানরা বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বোচ্চ ব্যবধানে হারের প্রহর গুনছিল। সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করেছেন টেল-এন্ডারে নামা মাহেশ থিকশানা ও ‍কাসুন রাজিথা। দুজনের ব্যাটে যথাক্রমে আসে ১২ ও ১৪ রান। মাত্র ১৯.৪ ওভারেই ভারতের দেওয়া লক্ষ্যের চেয়ে ৩০২ রান দূরত্বে লঙ্কানদের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে।

সংবাদটি শেয়ার করুন