নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরমজিদ গ্রামের বাসিন্দা ছায়েরা খাতুনকে (৫৬) হয়রানি, হুমকি ও জোরপূর্বক টাকা আদায়ের চেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী নারী। সংবাদ সম্মেলনে ওই নারী অভিযোগ করেন প্রভাবশালী কামরুল ইসলাম প্রকাশ কামরুল ডুবাইওয়ালা চরজব্বার থানার এসআই আনছার উল্ল্যাকে দিয়ে তাকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করছে।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে নোয়াখালীর প্রেসক্লাবের সহিদ উদ্দিন এস্কান্দার কচি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী নারী।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী নারী ছায়েরা খাতুন বলেন, একসময় হাতিয়ার বয়ারচর এলাকায় স্বামী-সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতেন তিনি। পাশ^বর্তী কামরুল ইসলাম প্রকাশ কামরুল ডুবাইওয়ালা নামের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি তার স্বামী আবদুল মোতাবেলকে আমাদের বাড়ির জায়গা নামমাত্র মূল্যে তার কাছে বিক্রি করতে চাপ প্রয়োগ করে কামরুল। কিন্তু তাতে রাজি না হওয়ায় এতে ক্ষীপ্ত হয়ে গত ২০১৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে আমার স্বামী’সহ আমাকে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে তুলে নিয়ে তার বাড়িতে আটকে ৬লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে কামরুল। তার দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে আমাদের ব্যাপক মারধর করে জখম করে সে।
তিনি আরও বলেন, কয়েক মাস পর আমার স্বামী মারা যাওয়ায় কামরুলের অত্যাচারে নিরুপায় হয়ে আমি সন্তানদের নিয়ে স্বামীর ভিটা-বাড়ি ছেড়ে সুবর্ণচরের পূর্ব চরবাটা চলে আসি। কিন্তু তাতেও থামেনি কামরুল, সে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে আমার থেকে তিন লাখ বিশ হাজার টাকা পাবে বলে ভূয়া স্ট্যাম্প তৈরি চলতি বছরের ২ অক্টোবর সোমবার বিকেলে চরজব্বর থানার এস.আই মোঃ আনছার উল্যাহ রাসেলকে দিয়ে আমাকে থানায় ডেকে উক্ত টাকা দাবী করে। কিন্তু ওই স্ট্যাম্পের স্বাক্ষর ও স্ট্যাম্প আমার নয় এবং কামরুল আমার কাছে কোন টাকা পায় না বলে আমি পুলিশের ওই কর্মকর্তাকে জানানোর পরও ওই পুলিশ কর্মকর্তা ক্ষতিপূরণ বাবদ আরও ৬০হাজার টাকা’সহ সর্বমোট ৩লাখ ৮০হাজার টাকা ৯অক্টোবরের মধ্যে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে আমার থেকে বিভিন্ন কাগজে আরও ৫টি স্বাক্ষর নেন।
এসব বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে একটি লিখিত আবেদন করলে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে কামরুল এবং ওই পুলিশ কর্মকর্তা। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি বলে জানান ছায়েরা খাতুন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কামরুল ইসলাম প্রকাশ কামরুল ডুবাইওয়ালা জানান, আমি’সহ কয়েকজন পাওনাদার ছায়েরা খাতুন ও তার ছোট ছেলে আরিফকে চট্টগ্রাম থেকে ধরে এনে তৎকালিন চেয়ারমানের পরিষদের দিয়েও কোনো সমাধান পায়নি। আমি তার কাছ থেকে যে টাকা পাবো তার কাগজপত্র আমার কাছে আছে।
চরজব্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনছার উল্যাহ রাসেল তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বাদি কামরুল ইসলাম বিবাদী ছায়েরা খাতুনের ভাগনির জামাই হয় সম্পর্কে। ছায়েরা খাতুনের কাছ থেকে টাকা পাবে মর্মে কামরুল থানায় একটি অভিযোগ দেয়। অভিযোগের ভিত্তিতে আমি তাদের দুইজনকে থানায় ডেকে আনলে তারা বিষয়টি নিয়ে পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে চলে যায়। কিন্তু ছায়েরা খাতুনকে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ বা তার কাছ থেকে কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি।