শেয়ারবাজারে পতন কাটিয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে। মূল্যসূচক টানা বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতিও।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন বেড়ে ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস বাজারটিতে মূল্যসূচক ও লেনদেন বাড়লো। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) টানা দুই কার্যদিবস মূল্যসূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। তবে সিএসইতে লেনদেনের গতি কিছুটা কমেছে।
দেশের নানা ইস্যুতে দুই সপ্তাহ দরপতনের পর গত সপ্তাহের শেষ তিন কার্যদিবস টানা ঊর্ধ্বমুখী থাকে শেয়ারবাজার। এর মাধ্যমে পতন থেকে বেরিয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরার ইঙ্গিত দেয় শেয়ারবাজার। তবে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার শেয়ারবাজারে ফের দরপতন হয়। সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি কমে লেনদেনের গতি। ডিএসইতে লেনদেন কমে তিন’শ কোটি টাকার ঘরে চলে আসে। অবশ্য পরের কার্যদিবসেই আবার ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা পায় শেয়ারবাজার।
মঙ্গলবার লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। লেনদেনের শুরু থেকে শেষপর্যন্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে লেনদেনের পুরা সময়জুড়েই সূচকের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা বিমা খাত ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থানে। লেনদেনের পুরো সময়জুড়েই বিমা খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় থাকে। ফলে সার্বিক শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার তালিকা বড় হলেও বিমা খাতে দাম কমার তালিকা বড় হয়।
এছাড়াও, ডিএসইতে সব খাত মিলে এদিন ৭৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৭টির এবং ১৭১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বিমা কোম্পানি আছে মাত্র ৮টি। বিপরীতে ৪০টি বিমা কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৮ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৭৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৬২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৩৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
মূল্যসূচক ও লেনদেনের পরিমাণ দুটোই বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৭২ কোটি ২১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৪৭৬ কোটি ৭ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৯৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা। টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে জেমিনি সি ফুডের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৮ কোটি ৩১ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এপেক্স ফুটওয়্যারের ২৬ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৫ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সোনালী পেপার।
ডিএসইতে লেনদেনে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, ফু-ওয়াং ফুড, কহিনুর কেমিকেল, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, দেশবন্ধু পলিমার, সোনালী আঁশ এবং ওরিয়ন ইনফিউশন।
দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১৪২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩২টির এবং ৫৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।