গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অব্যাহত বিমান হামলা এবং সীমান্ত বন্ধ থাকার কারণে ব্যাপক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন অন্তত ৮৪ হাজার অন্তঃসত্ত্বা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস সিএনএনকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) জাতিসংঘের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিষয়ক অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র সিএনএনের সাংবাদিক জন ভাউসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, রাফাহ ক্রসিংয়ে (গাজা-মিসর সীমান্ত) অপেক্ষারত ট্রাকগুলোতে বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রীর পাশাপাশি ৭৮ কিউবিক মিটার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা উপকরণও রয়েছে, যা অন্তত ৩ লাখ মানুষের চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট।’
মার্গারেট হ্যারিস সিএনএনকে বলেন, ‘সীমান্ত বন্ধ থাকার কারণে সেগুলো গাজায় পৌঁছাতে পারছে না। তাছাড়া বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবাও দিতে পারছে না হাসপাতালগুলো। পাশাপাশি সারাক্ষণ হামলার আতঙ্ক তো রয়েছেই। আমরা কেবল চাইছি, সীমান্ত খুলে দিয়ে এই সহায়তা উপকরণগুলো গাজায় প্রবেশ করতে দেওয়া হোক। কারণ দিন দিন এই অপেক্ষা ভয়াবহ পীড়াদায়ক হয়ে উঠছে আমাদের সবার জন্য।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের অতর্কিত হামলার জবাবে ওই দিন থেকেই উপত্যকায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। একই সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয় গাজার সব সীমান্তপথ, বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় উপত্যকার পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগও। একদিকে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর বোমা বর্ষণ, আর অন্যদিকে পানি-বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ব্যাপক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে গাজার সাধারণ বেসামরিক লোকজন। বিশেষ করে জ্বালানির অভাবে কয়েকদিন আগে গাজার একমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবাও।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর হামলায় গত ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ২ হাজার ৮১৭ জনে। এই নিহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু ও নারী রয়েছেন। এ ছাড়াও গত ১০ দিনের হামলায় বাড়িঘর হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১০ লাখেরও বেশি মানুষ। মাত্র ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ভূখণ্ড গাজার জনসংখ্যা প্রায় ২৩ লাখ। দারিদ্র্য ও বেকারত্বপীড়িত এই জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ সরাসরি জাতিসংঘ ও অন্যান্য দাতা দেশ ও সংস্থার সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।