ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলা নাটকের নায়কদের সেকাল-একাল

বাংলা নাটকের নায়কদের সেকাল-একাল

৯০ দশক থেকে বাংলা নাটকে বেশ কয়েকজন নায়কের দেখা মেলে, যারা অভিনয় দিয়ে দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। কেউ কেউ এখনও দিব্বি অভিনয়ে সরব। দর্শকপ্রিয়তায় যারা শীর্ষে, জানা যাক তাদের কথা।

মানবিক ডাক্তার হিসেবে পরিচিত ডা. এজাজ, অভিনয় ও চিকিৎসা সমান তালেই চালিয়ে যাচ্ছেন। তার সুঅভিনয় দিয়ে দর্শকদের হৃদয়ে অন্যতম স্থান দখল করে আছেন। তিনি গরিবের ডাক্তার হিসেবে প্রশংসিত। জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের মাধ্যমে তার নাটকে জগতে আগমন। পরবর্তীতে তিনি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র শ্রাবণ মেঘের দিন। এর পর তিনি দুই দুয়ারী (২০০১), চন্দ্রকথা (২০০৩), শ্যামল ছায়া (২০০৪) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি তারকাঁটা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ৩৯তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতার পুরস্কারে লাভ করেন।

টিভি নাটকে ৯০ দশকে আগমন ঘটে জাহিদ হাসানের। মঞ্চ দিয়ে অভিনয় শুরু করা এ অভিনেতার প্রথম নাটক ‘জীবন যেমন’। এতে অভিনয় করে সবার মন জয় করে নেন। এরপর সমাপ্তি, কাশবনের কন্যা, সখী ভালোবাসা কারে কয়, ছবি শুধু ছবি নয় নাটকগুলো তাকে এনে দেয় তারকাখ্যাতি। নক্ষত্রের রাত, আজ রবিবার, সবুজ ছাতা, সবুজ ছায়া নাটকগুলো তাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে যায়। কখনো অভিনয় থেকে বিরতি নেননি তিনি, জনপ্রিয়তায়ও ভাটা পড়েনি।

আশির দশককে টিভি নাটকে অভিনয় শুরু আজিজুল হাকিমের। ছোট একটি চরিত্র। কিন্তু তিনি ব্যাপকভাবে পরিচিতি পান এবং একের পর এক এক ঘণ্টার নাটকে নায়কের চরিত্রে অভিনয় করার সযোগ পান ৯০ দশকে। শমী, বিপাশা, মিমিসহ সব জনপ্রিয় নায়িকার বিপরীতে নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন। নক্ষত্রের রাত, কোন কাননের ফুল, শেষ থেকে শুরু, তিতির ও শঙ্খচিলসহ অনেক আলোচিত নাটকের নায়ক তিনি।

৯০ দশকের টিভি নাটকের আরেকজন নায়ক শহীদুজ্জামান সেলিম। তিনি অনেক সাড়া জাগানো নাটকে সেই সময়ে অভিনয় করেন, ভালোবাসায় সিক্ত হন অভিনয়ের জন্য। জোনাকি জ্বলে ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন। তারপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। অভিনয় জীবনে কয়েকশ নাটকে অভিনয় করেছেন। এখনও তিনি ব্যস্ত শোবিজে।

গত শতাব্দির শেষ দশকের আরেকজন জনপ্রিয় নায়কের নাম মাহফুজ আহমেদ। সাংবাদিকতা থেকে অভিনয়ে আসা এবং সফল নায়কে পরিণত হওয়া পরিপূর্ণ একজন শিল্পী তিনি। শমী, বিপাশার বিপরীতে অভিনয় করেন বহু নাটকে। এক সময় অপি করিম, রিচি, তারিন, ঈশিতা, তিশার বিপরীতে প্রচুর নাটকে অভিনয় করে সুনাম অর্জন করেন। টিভি নাটকে নিজেকে ক্রমাগত ভাঙতে পেরেছেন। তার প্রমাণ নুরুল হুদা একদা ভালোবেসেছিল, অতঃপর নুরুল হুদা, আমাদের নুরুল হুদা ধারাবাহিকগুলোতে তার অনবদ্য অভিনয়।

এছাড়াও এই দশকে আবৃত্তি শিল্পী, মঞ্চ নাটকে নিয়মিত ছিলেন টনি ডায়েস। সেখান থেকে টিভি নাটকে এসে নাম কুড়ান। দেশসেরা মডেল সাদিয়া ইসলাম মৌর প্রথম নাটকের নায়ক টনি ডায়েস। নাটকটির নাম অভিমানে অনুভবে।

মঞ্চ নাটকের মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু কার বাংলা নাটকের একালের জনপ্রিয় তারকাদের মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা চঞ্চল চৌধুরী ও মোশাররফ করিমের উত্থান হয়। ধীরে ধীরে তারা টেলিভিশন নাটকে নাম লেখান। ক্যারিয়ারের শুরুতে প্রধান চরিত্রে সুযোগ না পেলেও সময়ের পথচলায় ঠিকই তারা নিজের গুণ চিনিয়ে দেন এবং নাটকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র করা শুরু করেন। তারপর এক সময় নক্ষত্রের মতোই জ্বলে উঠেন শোবিজের আকাশে। টিভি নাটকের নতুন একটা অধ্যায়ের শুভ সূচনা করেন তারা।

বাংলা নাটকে রোমান্টিক ধাচের গল্পে রোমান্টিক হিরো হিসেবে অভিনেতা অপূর্ব ছোটপর্দায় উপস্থিত হন। এক সময় বড় ছেলে নাটকটি তার ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে ধরা দেয়। ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে এখনও সাফল্য ধরে রেখে অভিনয় করছেন তিনি নায়ক হিসেবে।

রোমান্টিক হিরোর কথা আসলে আফরান নিশোর নাম আসবেনা তা দর্শকরা কখনোই মেনে নিতে পারবেননা। অভিনয় ও মডেলিং দিয়ে শুরু আফরান নিশো ক্যারিয়ারের শুরুতে হুট করে জ্বলে উঠতে পারেননি। কিন্তু একটা সময় তিনি নানা রকম চরিত্রে অভিনয় করতে করতে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যান। তার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছেই।

‘তাহসান’ গায়ক থেকে নায়ক হয়ে যাওয়া এক সাফল্যের নাম । গত কয়েক বছরে আরও বেশ কয়েজন নায়ক এসেছেন টিভি নাটকে। তারা বেশ ভালো করছেন। তাদের মধ্যে আছেন তৌসিফ মাহবুব, নিলয় আলমগীর, ইরফান সজ্জাদ, মনোজ প্রামাণিক, জোভান,খাইরুল বাশার, ফারহান প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন