রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানকে ঘিরে উৎসবের রং লেগেছে ঈশ্বরদীর রূপপুরে। সর্বত্র সাজ সাজ রব। বর্ণিল সাজে সাজানো হচ্ছে প্রকল্প ও গ্রীণসিটি এলাকা। আগামী ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার প্রকল্প এলাকায় রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কাছে ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম হস্তান্তর করবে।
ইতিমধ্যেই রাশিয়া থেকে উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিনিধিদল রূপপুরে এসেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানসহ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ঈশ্বরদীর রূপপুরে অবস্থান করছেন। অনুষ্ঠানকে বর্ণাঢ্য ও স্মরণীয় করতে চলছে মহাকর্মযজ্ঞ। গ্রীণসিটির সামনের প্রাচীরে কালারফুল চিত্রকর্ম অঙ্কন করা হয়েছে। এ চিত্রকর্ম দেখার জন্য এলাকার লোকজন ভিড় জমাচ্ছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা রোসাটমের মহাপরিচালক আলেস্কি লিখাচেভ সশরীরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম হস্তান্তর করবেন। বাংলাদেশের পক্ষে গ্রহণ করবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্ধসঢ়;লাদিমির পুতিন ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বা আইএইএর মহাপরিচালক
রাফায়েল গ্রোসি। রূপপুর প্রকল্পের আবাসন গ্রীণসিটিও সাজানো হচ্ছে বর্ণিল সাজে।
গ্রীণসিটির ভেতরেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আগামী ৬ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলবে। গ্রীণসিটির সামনের প্রাচীরে দৃষ্টিনন্দন চিত্রকর্ম ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ঢাকার চিত্রশিল্পী টিপু সুলতান কালারফুল চিত্রকর্মের মাধ্যমে নিউক্লিয়ার নিয়ে সাধারণ মানুষের ধারণাকে দ‚রীকরণের চেষ্টা করেছেন। চিত্রশিল্পী টিপু সুলতান বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হলে এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনষ্ট হবে বলে ধারণা রয়েছে। প্রকল্পের কারণে প্রাকৃতিক পরিবেশে যে কোনো প্রভাব পড়বে না, এ বিষয়টি কালারফুল চিত্রকর্মের মাধ্যমে মানুষকে আকর্ষণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আমাদের দেশের অর্জনগুলো এ চিত্রকর্মে স্থান পেয়েছে।
সোমবার (২ অক্টোবর) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান গ্রীণসিটির চিত্রকর্ম পরিদর্শন করেছেন। এসময় গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরে এতো বড় প্রাপ্তি এর আগে দেশের জন্য হয়নি। আমরা এখন বিশ্বে ৩৩তম পারমাণবিক দেশের মর্যাদা অর্জনের পাশাপাশি এ ধরনের টেকনোলজি নিয়ে কাজের সক্ষমতা অর্জন করেছি। এটা বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় পাওয়া।
মন্ত্রী বলেন, আমরা এককভাবে নয়, সারা বাংলাদেশের মানুষ এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যেভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে সেজন্য আমরা দেশের সব মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। দেশের মানুষের সহযোগিতার কারণেই আজকে আমরা এ প্রকল্প পরিসমাপ্তির দিকে নিয়ে যেতে পেরেছি। প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, ২০২৪ সালের মার্চে প্রথম ইউনিটে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করার কথা দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে। পরের বছর ২০২৫ সালের মাঝামাঝি
দ্বিতীয় ইউনিট চালু হতে পারে। দুটি ইউনিটে মোট ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।