শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভালুকায় প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে উৎপাদন হচ্ছে পেট্রোল ও গ্যাস

ময়মনসিংহের ভালুকায় উপজেলার মল্লিকবাড়ী ইউনিয়নের ভায়াবহ গ্রামের ছয় বন্ধু মিলে, ইউটিউব দেখে ফেলে দেয়া প্লাস্টিক পন্য গলিয়ে উৎপাদন করছে পেট্রোল, গ্যাস, ডিজেল ।

ময়মনসিংহের ভালুকায় উপজেলার মল্লিকবাড়ী ইউনিয়নের ভায়াবহ গ্রামের ছয় বন্ধু মিলে, ইউটিউব দেখে ফেলে দেয়া প্লাস্টিক পন্য গলিয়ে উৎপাদন করছে পেট্রোল, গ্যাস, ডিজেল।

মোস্তফা, রামু, রফিকুল, সাইদুল, আশরাফুল, এবং বিল্লাল এই ছয় বন্ধুর সম্মিলিত চেষ্টায় গড়ে উঠেছে প্লাস্টিক পন্য গলিয়ে গ্যাস ও জ্বালানী তৈলের রিফাইনারি প্লান্ট।

রিফাইনারি প্লান্টটিতে পলিথিন প্লাস্টিকের বর্জ্য ডুকানো হচ্ছে বিশেষ ভাবে তৈরি ড্রামে এর পর ড্রামটিতে দেয়া হচ্ছে আগুনের তাপ এতে ড্রামে থাকা পলিথিন প্লাস্টিক গলে বাষ্পে রুপ নেয়, সেই বাষ্প আলাদা আলাদা চেম্বারে গিয়ে জমা হয় ডিজেল পেট্রোল, ও গ্যাসে রুপান্তর হয়ে।

এই পলিথিন প্লাস্টিকের যত্রতত্র ব্যবহারে পরিবেশ হচ্ছে দূষিত, এ দূষণ থেকে কিভাবে সমাজকে বাঁচানো যায় সে চিন্তা থেকে ইউটিউব দেখে পলিথিন, প্লাস্টিক গলিয়ে জ্বালানি উৎপাদনের পদ্ধতি আয়ত্বে আনার চেষ্টা করেন এ উদ্যোক্তারা।

তারা জানান ২০০ কেজি প্লাস্টিক গলিয়ে ১০০ কেজি জ্বালানি তৈল পাওয়া যায়। তারা কয়েক বার চেষ্টা করে সফল হন তারা। আর এ জ্বালানি পেট্রোল দিয়ে মাইলেজ একটু বেশি হয়। তাদের প্রত্যাশা সরকার যদি তাদের সহযোগিতা করে তাহলে জ্বালানি খাতে তারা ভূমিকা রাখতে পারে।

এই পদ্ধতিতে বাণিজ্যিকভাবে তেল উৎপাদন করা গেলে স্বল্পমূল্যে জ্বালানি তেল পাওয়া সম্ভব হবে বলে ধারণা করছেন অনেকে।
তাদের এই প্লান্টটির পিছনে খরচ হয়েছে ৮থেকে ৯ লাখ টাকার মতন। তারা ৫০ হাজার টাকার প্লাস্টিক থেকে প্রায় ৬৫ হাজার টাকার জ্বালানি তৈল এবং গ্যাস উৎপাদন করা যায়।

আরও পড়ুনঃ  গরু-মহিষের ভেজাল দুধ খালে

উদ্যোক্তা বিল্লাল বলেন আমি একজন ইঞ্জিন মিস্ত্রি জামালপুরের তৌহিদুল ইসলাম কে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরস্কার দিয়েছিল এ জ্বালানি উৎপাদনের জন্য আমি সেটা দেখে নিজে উৎসাহিত হয়ে ইউটিউব দেখে কাজ শুরু করেছি। আমরা সফল তবে সরকার আমাদের কে যদি সহযোগিতা করে তাহলে আমরা উৎপাদন ব্যাপক ভাবে বাড়াতে পারবো।

উদ্যোক্তা মোস্তফা বলেন আমি পেশায় কৃষক কৃষি কাজ করতে গিয়ে জমিতে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকের বজ্য পেতাম এতে চাষাবাদ এবং ফসলে অনেক ক্ষতি হতো পরে বিল্লাল মামার উদ্যোগে আমরা ছয় বন্ধু মিলে এই প্লান্টটি করেছি।

আরেক উদ্যোক্তা রফিকুল ইসলাম বলেন আমাদের বিল্লাল মামার উদ্যোগেই আমরা কয়েকজন বেকার বন্ধুরা মিলে এ কাজ শুরু করেছি এখন মোটামুটি সফল আমরা সরকারের কাছে সহযোগিতা কামনা করছি।

মল্লিক বাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকরাম হোসাইন বলেন তাদের এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়, তবে এর দ্বারা পরিবেশের কোন ক্ষতি যেন না হয় সে দিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা ভালুকা আঞ্চলিক শাখার সদস্য সচিব কামরুল হাসান পাঠান কামাল জানান,ভালুকার বিভিন্ন স্থানে প্লাস্টিক বর্জ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এগুলো পরিবেশের জন্য অত্যান্ত হুমকি স্বরুপ।

এ সমস্ত প্লাস্টিক বর্জ্য গলিয়ে গ্যাস ও জ্বালানি উৎপাদনের উদ্যোগটি সুন্দর তবে সেটি পরিবেশ সম্মত হলে ভালো হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন