ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলে পাথরের সঙ্গে ধাক্কার পর অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী একটি জাহাজডুবিতে প্রাণহানি বেড়ে ৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে। আজ (রোববার) ইতালির উপকূলের স্টেকাটো ডি কুত্রর কাছে এই জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে বলে দেশটির পুলিশ ও উপকূলরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ইতালির পূর্ব ক্যালাব্রিয়া উপকূলের সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্ট স্টেকাটো ডি কুত্রর কাছে ওই জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে।
ইতালির উপকূলরক্ষী বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ডুবে যাওয়া জাহাজ থেকে মোট ৮০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে কয়েকজন জাহাজডুবির পর সাঁতরে তীরে পৌঁছেছেন। এছাড়া উপকূলে ৪৩ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। জাহাজটিতে প্রায় ১২০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন। তীর থেকে কয়েক মিটার দূরে পাথরের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় জাহাজটির। নিখোঁজদের উদ্ধারে এখনও অনুসন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে দেশটির উপকূলরক্ষী বাহিনী। এর আগে, কুত্রর মেয়র আন্তোনিও সেরাসো স্কাইটিজি ২৪ টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেছিলেন, নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। তিনি বলেন, উত্তাল সমুদ্রে অভিবাসীদের বহনকারী জাহাজটি পাথরের সঙ্গে সংঘর্ষের পর কয়েক টুকরো হয়ে যায়। ধ্বংসাবশেষের কিছু অংশ উপকূলের প্রায় ৩০০ মিটারজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল।
দেশটির অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা জেট স্কিতে করে জীবিতদের উদ্ধারে সাগরে অনুসন্ধান অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু সাগরের পরিস্থিতি উত্তাল হওয়ায় উদ্ধার অভিযান কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ক্যালাব্রিয়ার দমকল বাহিনীর মুখপাত্র দানিলো মাইদা।এর আগে, ইতালির বার্তা সংস্থা আনসার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তত ২৭টি মৃতদেহ সমুদ্র সৈকতে ভেসে এসেছে এবং আরও কয়েকজনের মরদেহ সাগরের পানিতে শনাক্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় বার্তা সংস্থা অ্যাডনক্রোনোস বলেছে, ডুবে যাওয়া জাহাজটির যাত্রীরা ইরান, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের নাগরিক। অন্যদিকে, আনসা বলেছে, জাহাজটিতে ইরান, ইরাক, আফগানিস্তান এবং সিরিয়া থেকে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীরা ছিলেন।
প্রসঙ্গত, সমুদ্রপথে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টাকারী অভিবাসীদের জন্য ইতালি অন্যতম প্রধান এক প্রবেশপথ। কেন্দ্রীয় ভূমধ্যসাগরীয় এই রুটটি বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক হিসেবে পরিচিত। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রোজেক্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে মধ্য-ভূমধ্যসাগরে অন্তত ২০ হাজার ৩৩৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন অথবা নিখোঁজ হয়েছেন।
আনন্দবাজার/কআ