বিএনপি নেতাকর্মীদের সাবধান করে নারায়ণগঞ্জে সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আমি গতকাল (শনিবার) রাত থেকে মানসিকভাবে অস্থির। আমি চাপ নিতে পারছি না। গতকাল বিএনপির প্রোগ্রামে স্লোগান দিয়েছে। তারা বলেছে, ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম, শেখ হাসিনার বাবার নাম’। পাঁচ মিনিটও লাগবে না আমাদের মাটির নিচ থেকে খুঁজে বের করে আনতে। ধৈর্য ধরেছি। জনগণ ভীমরুলের চাক নিয়ে আপনাদের সামনে এসে হাজির হবে। আমি সবকিছু বুঝি। বাংলাদেশে খুনের রাজনীতি কায়েম করার চেষ্টা হচ্ছে। ওরা ওদের দলের নেতাদের মেরে নির্বাচন ঠেকানোর চেষ্টা করছে। নারায়ণগঞ্জে অনেক নেতা আছেন নৌকা নিয়া পাশ করেন। কে কার উকিল বাপ, কে কার উকিল মা আমরা জানি। এটা কী স্লোগান আমি জানতে চাই।
সিদ্ধিরগঞ্জের এম ডব্লিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আজ রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তিনি এসব কথা বলেন।
শামীম ওসমান বলেন, ওরা ক্ষমতায় এসে আমার বাড়িতে হামলা করেছে, আগুন দিয়েছে, আমার দাদার বাড়ি বায়তুল আমান ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। আমার ভাইয়ের খামারে গিয়ে ৩০০ গরুর দুধের বান ব্লেড দিয়ে কেটে ফেলেছিল। শুধুমাত্র আমার ভাই হওয়ার অপরাধে আমার ভাই সেলিম ওসমানকে তুলে নিয়ে টর্চার করেছে। আমরা কিছু করিনি, মাফ করে দিয়েছি। নারায়ণগঞ্জে ভাষা সামলান। এমন কোন কাজ করবেন না যেন নারায়ণগঞ্জ অস্থির হয়।
তিনি বলেন, মিথ্যা আশ্বাস আমি দেই না৷ দেয়ার মালিক আল্লাহ। ৯৬ সালে যখন আমরা ক্ষমতায় আসি এমন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই যেখানে আমি কাজ করিনি। বাংলাদেশের এমপিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কাজ আমি এনেছি। সবাই মিলে আমরা কাজ করেছি। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বুঝতে পারছি না। তাই আমি দুশ্চিন্তায় আছি। আমার স্বপ্ন এটাকে একটা হাব বানানো। মেডিকেল এন্ড এডুকেশন হাব। ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ পাশ হয়েছে। আমি আশা করি এই এলাকাতেই এটা হবে। এটা লিংক রোডের পাশেই হবে।
বাংলাদেশ হবে আইটি নির্ভরশীল। আমাদের এখানে শেখ কামাল আইটি ইনস্টিটিউটের কাজ শুরু হচ্ছে। সেটাও এই লিংক রোডের পাশে, টেকনিক্যাল কলেজ এন্ড স্কুল। আমি মেডিকেল কলেজ ও শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে এই এলাকাটাকে সাজাতে চাই। যেন আমাদের সন্তানদের ঢাকা যেতে না হয়।
শামীম ওসমান বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতায় আসে তখন আমাদের শাহীনকে হত্যা করা হয়েছিল, সুন্দর আলীকে ভাইকে মেরে ফেলা হয়েছিল, আমাদের মোজাফফর ভাইকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা কি অপরাধ করেছিলাম? আমরা কি মানুষ না। আমরা মরলে কি আমাদের সন্তানরা কাঁদে না। আমরা মরলে কি আমাদের বাচ্চারা এতিম হয় না। আমাদের রাজনীতি করার কথা ছিল না। যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন। আমারতো জীবন শেষ। আমি চলে যাবো। তোমরা থাকবে। আমরা তোমাদের সুন্দর জীবন দিতে চাই। শেখ হাসিনা তোমাদের ভবিষ্যত। আমাদের রাজনীতি করার কথা না। আমাদের ভাইদের মারা হয়েছে আমরা প্রতিশোধ নেইনি। ওরা আমাদের শৈশবকে মেরেছে। যৌবনকে হত্যা করেছে। যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন আমরা জাপানের মত উন্নত থাকতাম।
এম. ডব্লিউ স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাসিক ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ্ব মতিউর রহমান মতির সভাপতিত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চন্দন শীল, জেলা পরিষদ সদস্য ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা প্রমূখ।
আনন্দবাজার/কআ