শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বায়ুদূষণ রোধে ৯ দফা নির্দেশনার অগ্রগতি জানতে চান হাইকোর্ট

বায়ুদূষণ রোধে ৯ দফা নির্দেশনার অগ্রগতি জানতে চান হাইকোর্ট

রাজধানীর মানুষকে বায়ুদূষণ থেকে বাঁচাতে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। সেই নির্দেশনা কতটুকু বাস্তবায়িত হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। পরিবেশ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টদের আগামী ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এটি জানাতে হবে।

মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শুনানিতে হাইকোর্টকে জানানো হয় গত কয়েকদিন ধরে বায়ুদূষণে বিশ্বের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ঢাকা। এসময় আদালত প্রশ্ন তুলে বলেন, পরিবেশ নষ্ট করে কি আপনারা আমাদের মেরে ফেলবেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করীম।

রাজধানীর বায়ুদূষণ রোধে আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) আবেদন করেন। ওই আবেদনের বিষয়ে শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন আদালত। এর আগে এইচআরপিবি’র করা এক রিটের ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি বায়ুদূষণ রোধে ৯ দফা নির্দেশনাসহ আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তখন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছিলেন। সে সময় আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী আমাতুল করীম, উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী তৌফিক ইনাম ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফরিদা ইয়াসমিন।

আরও পড়ুনঃ  সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি নয়

আদলতের ৯ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হলে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বায়ুদূষণ কিছুটা কমতে থাকে। কিন্তু ঢাকা শহর আবার সর্বোচ্চ বায়ুদূষণের শহর বলে গণমাধ্যমে আসে। তাই গণমাধ্যমের খবর যুক্ত করে গত বছরের ১৫ নভেম্বর আবেদনটি করা হয়। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বায়ুদূষণের যে বর্ণনা আছে, তা সবার জন্য উদ্বেগজনক, এমন তথ্য জানান আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ঢাকার বাতাসে নতুন বিপদ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এটি যুক্ত করে এইচআরপিবির পক্ষে ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করা হয়। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৮ জানুয়ারি হাইকোর্টের অপর একটি দ্বৈত বেঞ্চ রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা দেন। আইনজীবীর তথ্যমতে, আদালতের ৯ দফা নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে ঢাকা শহরে মাটি, বালু, বর্জ্য পরিবহন করা ট্রাক ও অন্যান্য গাড়িতে মালামাল ঢেকে রাখা। নির্মাণাধীন এলাকায় মাটি, বালু, সিমেন্ট, পাথর, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা। রাস্তায় পানি ছিটাবে সিটি করপোরেশন। রাস্তা, কালভার্ট, কার্পেটিং ও খোঁড়াখুঁড়ির কাজে দরপত্রের শর্ত পালন নিশ্চিত করা। সড়ক পরিবহন আইন অনুসারে গাড়ির চলাচল সময়সীমা নির্ধারণ ও উত্তীর্ণ হওয়া সময়সীমার পরে গাড়ি চলাচল বন্ধ করা। পরিবেশগত সনদ ছাড়া চলমান টায়ার ফ্যাক্টরি বন্ধ করা। মার্কেট, দোকানের প্রতিদিনের বর্জ্য ব্যাগে ভরে রাখা এবং বর্জ্য অপসারণ নিশ্চিত করতে সিটি করপোরেশনের পদক্ষেপ নেওয়া।

আনন্দবাজার/কআ

সংবাদটি শেয়ার করুন