ফুটবলে সম্প্রতি সাদা কার্ড দেখানোর মধ্যদিয়ে নতুন ইতিহাস রচিত হয়েছে। ফুটবলে হলুদ কার্ড আছে, লাল কার্ড আছে, কিন্তু সাদা কার্ড? এমন কিছু সম্ভবত ফুলপ্রেমীরা ভাবতেও পারেন না।
পর্তুগালে ‘ওমেনস কাপ’ প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনালে গত শনিবার (২১ জানুয়ারি) বেনফিকা–স্পোর্টিং লিসবন ম্যাচে এই কার্ড দেখানো হয়। আর এ কার্ড দেখানোর মধ্য দিয়ে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই করে নেন রেফারি কাতারিনা ব্রাঙ্কো। সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, ফুটবলের ইতিহাসে এই প্রথম সাদা কার্ড দেখানো হলো।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম এএস বলছে, রেফারি ম্যাচে আধঘণ্টার একটু আগে এই কার্ড দেখান। মূলত ম্যাচে ‘ফেয়ার প্লে’ মানসিকতাকে আরও ভালোভাবে স্বীকৃতি দিতেই এই কার্ডের প্রচলন। তবে ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, সাদা কার্ড দেখানোর আক্ষরিক উদ্দেশ্য ও ফল এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। তবে ‘ফেয়ার প্লে’ এবং খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতাকে প্রাধান্য দিতেই এই কার্ড ব্যবহার করা হবে।
তবে, ওইদিন কোনো খেলোয়াড় কিংবা কোচিং স্টাফকে সাদা কার্ড দেখানো হয়নি। এক খেলোয়াড় ডাগ আউটে অসুস্থ হয়ে পড়লে মেডিকেল টিম তৎক্ষণাৎ সেই খেলোয়াড়কে চিকিৎসা দেন। দুই দলের মেডিকেল টিমই এই কাজে ব্যস্ত ছিলেন। রেফারি কাতারিনা ব্রাঙ্কো তখন দুই দলের মেডিকেল টিমকেই সাদা কার্ড দেখান।
এস্তাদিও লুইজ স্টেডিয়ামের দর্শকরা ইতিবাচক উদ্দেশ্যে রেফারির এই সাদা কার্ড দেখানোকে করতালির মাধ্যমে সুন্দরভাবেই গ্রহন করেছেন। এএস বলছে, সাদা কার্ড ব্যবহার মূলত ‘খেলার নৈতিক উন্নয়ন করা’ই লক্ষ্য।
উল্লেখ্য, ১৯৭০ বিশ্বকাপ থেকে এ পর্যন্ত ফুটবলে শুধু হলুদ ও লাল কার্ডই ব্যবহার করা হয়েছে। হলুদ কার্ড খেলোয়াড়কে সতর্ক করে দেওয়ার জন্য আর লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেওয়া হয়।
পর্তুগিজ ফুটবল ফেডারেশনের (এফপিএফ) পরামর্শ নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে সাদা কার্ড চালু করা হয়েছে। এটি এখন পর্যন্ত শুধু পর্তুগিজ ফুটবলেই ব্যবহার করা হয়েছে। তবে সাদা কার্ডের প্রসঙ্গ আগেও উঠেছিলো। উয়েফার সাবেক সভাপতি মিশেল প্লাতিনি এর আগে সাদা কার্ড ব্যবহারের কথা বলেছিলেন। ফরাসি এ কিংবদন্তি মাঠে কোনো খেলোয়াড় বাজে আচরণ করলে সাদা কার্ড দেখিয়ে তাঁকে ১০ মিনিটের জন্য মাঠ থেকে বের করে দেওয়ার নিয়ম চালুর কথা বলেছিলেন।
খেলোয়াড়দের খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতার উন্নয় নিশ্চিত করতেই পর্তুগাল সবার আগে সাদা কার্ডের প্রচলন করল। ইউরোপের অন্যান্য বড় লিগে এই কার্ডের প্রচলন ঘটে কি না, সেটাই দেখার বিষয়।
আনন্দবাজার/কআ