ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বে দূষিত শহরের তালিকায় আবারো শীর্ষে ঢাকা

দেশের রাজধানী শহর ঢাকা আবারো বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় আবারও শীর্ষে উঠে এসেছে।

এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ৩১৯ নিয়ে বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় শীর্ষে ছিল ঢাকা। একিউআই স্কোর অনুযায়ি যা খুব ‘বিপজ্জনক’।

একিউআই স্কোর ২১১ নিয়ে দূষিত শহরের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে উজবেকিস্তানের তাসখন্দ। তবে গতকাল (মঙ্গলবার) সকালে দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে ছিল উজবেকিস্তানের এই শহরটি। বুধবার সকালে ঢাকা আবারো শীর্ষে উঠে আসে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার দূষিত বাতাসের শহরের এ তালিকা প্রকাশ করে থাকে।

একিউআই স্কোর হিসেব করা হয়, ১০১ থেকে ২০০ হলে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। অন্যদিকে ২০১ থেকে ৩০০ একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয় এবং ৩০১ থেকে ৪০০ একিউআই স্কোরকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।

দূষণের পাঁচটি বৈশিষ্টের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয়- বস্তুকণা (পিএম-১০ ও পিএম-২.৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন (ও৩)। বস্তুকণা পিএম-২.৫ হলো বাতাসে থাকা সব ধরনের কঠিন এবং তরল কণার সমষ্টি, যার বেশিরভাগই বিপজ্জনক। মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমন— প্রাণঘাতী ক্যান্সার এবং হৃদযন্ত্রের সমস্যা তৈরি করে পিএম-২.৫। এছাড়া বায়ু দূষণকারী এনও২ প্রধানত পুরোনো যানবাহন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শিল্প স্থাপনা, আবাসিক এলাকায় রান্না, তাপদাহ এবং জ্বালানি পোড়ানোর কারণে তৈরি হয়।

ডব্লিউএইচও তার বায়ুমান নির্দেশক গাইডলাইন পরিবর্তনের পর ২০২১ সালে তারা জানায়, পিএম-২.৫ নামে পরিচিত ছোট এবং বিপজ্জনক বায়ুকণার গড় বার্ষিক ঘনত্ব প্রতি ঘনমিটারে ৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি হওয়া উচিত নয়। তবে এরচেয়েও কম ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণের সমস্যায় জর্জরিত। শহরটির বাতাসের মান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বায়ু দূষণে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ প্রাণ হারান। মূলত স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী বাধা পালমোনারি রোগ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পায়।

ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণাধীন স্থাপনার ধুলো, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। জীবাশ্ম জ্বালানি দহন, বায়োমাস পোড়ানো, চলাচলের অনুপযোগী যানবাহন থেকে নির্গমন, ইটভাটা এবং ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজের ফলে বাংলাদেশের শহরগুলোর দূষিত বায়ুর মান প্রায়ই বৈশ্বিক গণমাধ্যমের শিরোনামে আসে।

আনন্দবাজার/কআ

সংবাদটি শেয়ার করুন