ঢাকা | শুক্রবার
১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রুশ-মার্কিন কূটনৈতিক বাহাস

রুশ-মার্কিন কূটনৈতিক বাহাস

বাংলাদেশের মানবাধিকার আর অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে চলতি মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একাধিক বিবৃতি দিয়েছে। এতে সবার দৃষ্টি ঢাকার মানবাধিকার, গণতন্ত্রসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিবন্ধ হয়েছে। আর এসব বক্তব্য, বিবৃতি আর আলোচনা বিতর্ক গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহায়তাকারী অন্যতম বন্ধুদেশ রাশিয়া। গত মঙ্গলবার ঢাকাস্থ রাশিয়ান দূতাবাস থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, গণতন্ত্র সুরক্ষা বা অন্য কোনো অজুহাতে বাংলাদেশসহ তৃতীয় কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার বিষয়ে রাশিয়া বদ্ধপরিকর।

রাশিয়ার সেই বিবৃতির একদিন পর গত বুধবার ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাসের টুইটার ও ফেসবুকে এর সমালোচনা করে আলাদা বক্তব্য দেয়া হয়।

টুইটে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে টেনে এনে মার্কিনের পক্ষে বলা হয়, ‘এটি (অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ) কি ইউক্রেনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?’ আর ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, এ বছরের শুরুর দিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ ও বিনা উসকানিতে হামলার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের ১৪১টি সদস্য রাষ্ট্র জাতিসংঘের এক প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়ার মাধ্যমে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে। ২০২২ সাল শেষ হয়ে এলেও সারাবিশ্বের দেশগুলো অব্যাহতভাবে ইউক্রেনের জনগণের পাশে রয়েছে।

মার্কিনী দূতাবাসের টুইট ও ফেসবুক পোস্টের পরই গত বুধবার ঢাকাস্থ রাশিয়ান দূতাবাস দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভার একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো মূল্যে তার আধিপত্য বজায় রাখার চেষ্টা করা, সেইসঙ্গে নিরাপত্তা গ্যারান্টি সম্পর্কে একটি গুরুতর সংলাপে জড়িত থাকার অবজ্ঞাজনক অনিচ্ছুকতা একটি ফলাফলের দিকে পরিচালিত করেছে, যা প্রত্যাশিত ছিল। আফগানিস্তানে বড় ধরনের বিপর্যয়ের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্রমবর্ধমানভাবে একটি নতুন সংঘাতে আকৃষ্ট হয়েছে। শুধু কিয়েভের নব্য-নাৎসি শাসনকে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সমর্থন করে নয় বরং স্থলভাগে তার সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি করে।

সম্প্রতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও সম-সাময়িকী বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বক্তব্য ও কার্যকলাপগুলোর প্রতি তীক্ষ্ম নজর রাখছিল রাশিয়া। পাকিস্তানের নাগপাশ থেকে বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করেছে ৫১ বছর হলো। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বিশ্ব দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। একভাগ চীন-যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পাকিস্তানের পক্ষ নেয়। অপরটি ভারত-রাশিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় সমর্থন দেয় (অবশ্য এখন দুটি বলয়ই বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র)। সেই ডিসেম্বর মাসেই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ ১৫টি দেশ চলতি মাসেরই বিজয় দিবস উদযাপনের ঠিক ১০ দিন আগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ঢাকায় মহাসমাবেশকে ঘিরে আলাদা বিবৃতি দিয়েছে। সেখানে তারা মানবাধিকার, অভ্যন্তরীণ রাজনীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলে।
সেদিন অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ডেনমার্ক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস ও হাইকমিশনসহ ১৫টি বিদেশি দেশ যৌথভাবে বিবৃতিতে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করে এবং তারা মানবাধিকার রক্ষায় ও বাংলাদেশে উন্নয়নের প্রসারে গণতন্ত্রের কথা তুলে ধরে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস গত ৬ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে ব্রিফিংয়ে বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে অপরাধ হিসেবে দেখা যাবে না। এটিকে চাপ বা ভয় দেখানোর কৌশল হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে না। বাংলাদেশে ভীতি প্রদর্শন ও রাজনৈতিক সহিংসতার খবরে আমরা উদ্বিগ্ন। স্বাধীন মতপ্রকাশ, সমবেত হওয়ার ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মতো মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এরপর গত ৮ ডিসেম্বর মার্কিন মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ‘রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর বাংলাদেশের নৃশংস ক্র্যাকডাউন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গণতন্ত্র সমুন্নত রাখতে হবে’ শিরোনামে দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলী এক বিবৃতি দেন।

সেইসব ইস্যু যেতে না যেতেই গত ১৪ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকার শাহিনবাগে বিএনপির এক নিখোঁজ হওয়া নেতার বাসায় যায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। ‘মায়ের ডাক’ নামের সংগঠনের আহ্বানে সেখানে গেলে ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর তৎকালীন সেনাশাসক জিয়াউর রহমান বিদ্রোহ দমনের নামে ১১০০ হতে ১৪০০ সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্য ও অফিসারদের বিনাবিচারে হত্যা করে লাশ গুম করা স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের কান্না’ রাষ্ট্রদূতকে স্মালকলিপি দিতে যান। রাষ্ট্রদূত ‘মায়ের কান্না’র সংগঠকদের সঙ্গে কথা বলেননি, স্মারকলিপিও গ্রহণ করেননি। তিনি তড়িঘড়ি করে স্থান ত্যাগ করে এসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের কাছে এসে নিজের নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তোলেন।

পরবর্তীতে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানায় এবং গত ১৯ ডিসেম্বর ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তাতে বলা হয়, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূত (পিটার হাস) নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে ১৪ ডিসেম্বর ‘মায়ের ডাক’র সাথে তার পূর্বনির্ধারিত বৈঠক শেষ করেছেন। মিটিংটি বিক্ষোভকারীদের দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয়েছিল। রাষ্ট্রদূত যেখানে অবস্থান করছিল সেখানে বিক্ষোভকারীরা প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। অন্য বিক্ষোভকারীরা রাষ্ট্রদূতের গাড়ি ঘেরাও করে। আমরা বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপর্যায়ের পাশাপাশি ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছেও তুলে ধরেছি।

বিবৃতিতে বলা হয়, মানবাধিকার মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির কেন্দ্রে রয়েছে। তাই, মার্কিন দূতাবাস মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমস্ত অভিযোগকে গুরুত্ব সহকারে নেয় এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার সাথে নিয়মিত বৈঠক করে। মার্কিন দূতাবাস গত কয়েক বছর ধরে ‘মায়ের কান্নার’ কাছ থেকে কোনো পূর্বে যোগাযোগ পায়নি।” রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে হামলার প্রচেষ্টা চালিয়ে ছিলেন কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে ‘মায়ের কান্না’ সংগঠনের আহ্বায়ক কামরুজ্জামান লেলিন দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, প্রশ্নই উঠে না কোনো ধরনের হামলা চালানোর বা ঘিরে ধরার। আমরা তো পড়ালেখা করেছি। সৌজন্যবোধ তো পরিবার আমাদের শিখিয়েছে। আমরা লাইন ধরে দাঁড়িয়েছিলাম। পুলিশ সেখানে দাঁড়াতে দিতে চাইছিলো না। তখন হয়তো গাড়ির পাশে গিয়ে কয়েকজন দাঁড়িয়েছে এটিকে ঘিরে ধরা বলা হয় না। তার গাড়িতে সামান্য ছোঁয়াও কেউ দেয়নি। একটি অসত্য তথ্য ছড়ানো হচ্ছে যে, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের গাড়িকে ঘিরে ধরা হয়েছিল। আর এটা কেমন মানবাধিকার আপনি কারো কথা শুনবেন বাকিদের কথা শুনবেন না। আমাদের স্বজনরা ৪৫ বছর যাবত বিচার চাচ্ছে। যে ব্যক্তি নিজের বাবাকে হারিয়েছে, আপনজনদের হারিয়েছে তাদের ছাড়া বাকিরা তো এই ব্যথা বুঝবে না।

তারপরই রাশিয়ার দূতাবাস এমন এক মুহূর্তে তৃতীয় দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বিষয়ে বিবৃতি দেয়, যখন পশ্চিমা দেশগুলোর মিশনগুলোর ভূমিকা নিয়ে বাংলাদেশ সরকার সরাসরি উষ্মা প্রকাশ করছে। বিভিন্ন মন্ত্রী ও রাজনীতিবিদরা কথা বলছেন, সমালোচনা করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে এসব মিশন খোলামেলাভাবে কথা বলছিল। সাধারণত নির্বাচনের আগে কয়েক দশক যাবত দূতাবাসের কর্মকর্তারা এসব কথা বলে আসছে।
রুশ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অগ্রহণযোগ্যতা এবং তাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা সম্পর্কিত ১৯৬৫ সালের জাতিসংঘের ঘোষণা অনুসারে, কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক যা-ই হোক না কেন, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হস্তক্ষেপ করার অধিকার অন্য কোনো রাষ্ট্রের নেই। দুর্ভাগ্যবশত, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে (বিশেষত স্নায়ুযুদ্ধ শেষের পর থেকে) হস্তক্ষেপ না করার নীতি লঙ্ঘনের সমস্যাটি বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। কারণ, অনেকে বিশ্বাস করে যে তারা তাদের নিজেদের স্বার্থে ওই নীতি লঙ্ঘন করতে পারে।

রাশিয়ার দূতাবাস বলেছে, নিজেদের উন্নত গণতন্ত্রের বলে দাবি করা দেশগুলোর মধ্যে আধিপত্যবাদী উচ্চাকাক্সক্ষাগুলো সবচেয়ে স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। তারা শুধু জাতিসংঘের সার্বভৌম সদস্যরাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপই করে না, বরং নির্লজ্জ প্রতারণা, অবৈধ বিধিনিষেধ ইত্যাদি অবলম্বনও করে। ফলে বিশ্বের অনেক দেশের সার্বভৌমত্ব অভূতপূর্ব ঝুঁকির মুখে পড়ে।

বিগত ২০১৭ সালের একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিভিন্ন উপায় তুলে ধরে রুশ দূতাবাস জানায়, অবাণিজ্যিক ও বাণিজ্যিক সংস্থা প্রতিষ্ঠা বা সমর্থন করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করা, জনমত গঠনের জন্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার, প্রতিবাদ উসকে দেওয়া এবং আঞ্চলিক নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করা উল্লেখযোগ্য। কৌশলগত স্বাধীনতা ও একটি ন্যায্য বিশ্বব্যবস্থার সার্বভৌম দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখা দেশগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অন্যান্য সরঞ্জাম রয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যারা নিজেদের বিশ্বের শাসক বলে মনে করে, তারা ‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ’ রক্ষার অজুহাতে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে। এ ধরনের নীতি স্পষ্টতই বিশ্বব্যবস্থার স্থায়িত্ব নষ্ট করে এবং বিশৃঙ্খলাও বিপর্যয় ডেকে আনে। এর অসম্পূর্ণ তালিকায় আছে যুগোস্লাভিয়া, ইরাক, লিবিয়া, ইয়েমেন, সিরিয়া ও আফগানিস্তান। রুশ দূতাবাস বলেছে, ‘তৃতীয় দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার বিষয়ে রাশিয়া তার নীতিগত অবস্থানে সর্বদা অঙ্গীকারাবদ্ধ। বাংলাদেশের মতো অনেক রাষ্ট্র বিদেশি শক্তির নেতৃত্ব অনুসরণ না করে তাদের নিজস্ব জাতীয় স্বার্থের জন্য তাদের বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ নীতি গঠন করে, তারা একই পথ অনুসরণ করে। আমরা এ দেশগুলোর আকাক্সক্ষাকে সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করি, যাতে তারা স্বাধীনভাবে তাদের আরও উন্নয়নের উপায়গুলো নির্ধারণ করে এবং এমন একটি ব্যবস্থা গঠন করে, যা নব্য ঔপনিবেশিক পদ্ধতির অধীন নয়।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন