গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরে বসতবাড়িতে চুরি করতে গিয়ে আটক হাফিজার রহমান (৩৮) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা অপর দুই ব্যক্তি পালিয়ে যায়। গত মঙ্গলবার ভোর রাতে সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভাঙামোড় যুগিপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে থানা ও গ্রাম পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুরুত্বর অবস্থায় ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। নিহত হাবিজার রহমানের বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার চকমামরোজপুর গ্রামে। হাফিজার দীর্ঘদিন ধরেই চুরি পেশার সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে একটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে হাফিজার রহমানসহ তিন জন যুগিপাড়া গ্রামে আসে। এরপর তারা ওই গ্রামের রফিকুল ইসলামের বাড়ির একটি ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় ঘরের আলমারি ভেঙে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও বিভিন্ন মালামাল তাদের ব্যাগে ভর্তি করে। ঘটনার সময় বাড়ির মালিক রফিকুল ঢাকায় ও তার স্ত্রী চাম্পা বেগম বাবার বাড়িতে ছিলেন।
এরপর তারা পাশের নুরু মিয়ার বাড়ির গোয়াল ঘরে ঢুকে তিনটি গরু নিয়ে বের হয়। তারা গরু নিয়ে বাড়ির পশ্চিম পাশের ফাঁকা জমিতে যেতেই আশপাশের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে তাদের ধাওয়া করে। গ্রামবাসির ধাওয়ায় দুইজন পিকআপ নিয়ে পালিয়ে গেলেও আটক হন হাফিজার। পরে তাকে নুরুর বাড়িতে এনে একটি ঘরে আটকে রেখে পুলিশ ও স্থানীয় চেয়ারম্যানকে খবর দেয়া হয়। ততক্ষণে বিক্ষুদ্ধ গ্রামবাসি ঘরের বেড়া ও দরজা ভেঙে টেনেহিছরে হাফিজারকে বের করে গণপিটুনি দেয়। এতে গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়েন হাফিজার।
দামোদরপুর ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘দুই বসতবাড়িতে গরুসহ স্বর্ণালংকার ও টাকা চুরির ঘটনায় হাতেনাতে আটক ওই যুবককে গণপিটুনি দেয় বিক্ষুদ্ধ জনতা। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় তার সঙ্গে থাকা অপর দুইজন পিকআপ নিয়ে দ্রুত গতিতে পথচারিদের চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে দুই থেকে তিন ব্যক্তি আহত হয়েছেন। ঘটনাটি থানা পুলিশকে অবগত করা হয়েছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) এনায়েত হোসেন জানান, চুরির সময় পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ওই যুবকের মরদেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’
