ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেসিকে পরানো ‘বিশত’ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

মেসিকে পরানো 'বিশত' সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

কাতার বিশ্বকাপের শিরোপা হাতে তুলে নেওয়ার আগে আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসিকে আরবের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘বিশত’ পরানোর চিত্র সবার নজর কেড়েছে। আরব সংস্কৃতির অন্যতম বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ পোশাক ‘বিশত’।

বিশত নামের ওই পোশাকটি আরবের অন্য দেশগুলোতে আবা বা আবায়া নামেও পরিচিত। এটি মর্যাদা ও সম্মানের প্রতীক। সাধারণত বিশেষ উৎসবে বিশত পরা হয়। পোশাকটি পরে থাকেন ধর্মীয় নেতা, রাজনীতিক ও আরবের বিভিন্ন গোত্রের প্রধানেরা। অনেক সময় বড় কোনো সফলতা উদ্‌যাপনেও বিশত পরা হয়।

এই বিশত যখন কাতারের আমিরের মতো বিশেষ কেউ যদি পোশাকটি পরিয়ে দেন, সেটা তো বিরল সম্মানের বিষয়। এটা অনেকটা ব্রিটেনের নাইট খেতাব দেওয়া বা রাজার অভিষেক হওয়ার মতো। বিশত পরিয়ে মেসিকে এমন সম্মানই জানানো হয়েছে।

এদিকে বিশত পড়ানোর দৃশ্য যখন টেলিভিশনে আহমেদ আল-সালিম দেখতে পান গর্বে তার মন ভরে যায়। কারণ ওই বিশতটি তার দোকান থেকেই কেনা। তবে তিনি জানতেন না এই বিশত মেসির জন্য নেয়া হচ্ছে!

কাতারের রাজধানী দোহার সোক ওয়াকিফ মার্কেটে আল-সালিমের দোকান। এটি তার পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন সেখানে আট থেকে দশটি বিশত বিক্রি হয়। মেসির গায়ে জড়ানো সবচেয়ে দামী বিশতটি মূল্য দুই হাজার দুই শ’ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় দুই লাখ ২৬ হাজার ২৬৬ টাকা। মেসিকে রোববার রাতে ওই বিশত পরানোর পর তার দোকানে ক্রেতাদের লাইন লেগে গেছে। সোমবার দোকানে দেড় শতাধিক বিশত বিক্রি হয়েছে, যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ।

সালিম জানান, বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচটি দোকানের পাশে এক ক্যাফে বসে দেখছিলেন। এর আগে তার দোকানের সেরা দুটি বিশত তিনি বিক্রি করছেন বিশ্বকাপের কর্মকর্তাদের কাছে। তিনি জানতেন না বিশত দুটি দুই বিখ্যাত ফুটবলারের জন্য নেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে একটি ছিল একটু ছোট সাইজের, যেট চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক মেসি পরেছেন। অপরটি একটু বেশি লম্বা, যেটি ফ্রান্সের অধিনায়ক হুগো লোরিস পরেছেন। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি মেসিকে ওই বিশত পরাচ্ছিলেন তিনি দেখেন হতবাক হয়ে যান। কারণ ওই বিশতে তার দোকানের ট্যাগ লাগানো ছিল। তিনি খুশিতে আত্মহারা হয়ে যান। তার দোকান আল-সালিম স্টোর কাতারের রাজপরিবারের কাছে দীর্ঘদিন ধরে বিশত সরবরাহ করে আসছে। সাধারণত তারা দিনে ৮-১০টি বিশত বিক্রি করে। কিন্তু সোমবার তারা দেড় শ’র বেশি বিশত বিক্রি করেন।

মেসিকে বিশত পড়ানোর বিষয়টি কেউ কেউ বর্ণনা করেন এভাবে, ‘আমরা যখন আমিরকে দেখলাম মেসিকে বিশত পরাচ্ছেন তখন খুব খুশি হয়েছি। মনে হলো একজন বাদশা আরেকজন বাদশাকে বিশত উপহার দিচ্ছেন।’

তবে কেউ কেউ মেসিকে বিশত পরানোর সমালোচনা করে বলেছেন, বিশত পরায় মেসির জার্সি ঢেকে গেছে। পোশাকটি পরানো নিয়ে বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ করেছে অনেক পশ্চিমা গণমাধ্যম ও সাংবাদিক।

কিন্তু সামজিক মাধ্যমে আরবরা বিষয়টির প্রশংসা করেছে। এছাড়া সালিমসহ অন্যান্যরা বলেছেন, মেসিকে সম্মান করে বিশত পরানো হয়েছে। এখানে বিষয়টি ছোট করে দেখার কিছু নেই। সূত্র: আরব নিউজ

আনন্দবাজার/কআ

সংবাদটি শেয়ার করুন