বছরের চতুর্থ দিনে এসে “ডাবল সেঞ্চুরি” হাঁকিয়ে নতুন বর্ষকে স্বাগত জানালো পেঁয়াজ। গেল কয়েক দিন আগেও ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হতো দেশি পেঁয়াজ, কিন্তু এখন তা বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে। তবে এবারের অজুহাত হিসেবে পৌষের মাঝামাঝি সময়ের বৃষ্টিকে টানছেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে থেমে থাকেনি চীনা কিংবা তুরস্কের পেঁয়াজও। লাফিয়ে লাফিয়ে কেজি প্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে চীনা ও তুরস্কের পেঁয়াজ। যেখানে ৬০ থেকে ৭০ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে। তবে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব অনুযায়ী, গেল বছরের তুলনায় নতুন বছরের এ সময়ে দেশি পেঁয়াজের দাম ৫৩৩ শতাংশ এবং আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ২৪৫ শতাংশ বেশি।
নতুন বছরের শুরুতে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম বাড়ার সাথে আবারও নতুন করে যোগ হয়েছে পেঁয়াজ। আর এ সঙ্গে সঙ্গ দিতে শামিল হয়েছে রসুন, আদা ও সবজি। এসব মিলেয়ে নতুন বছরের প্রথম মাসেই হতাশায় ভুগছেন স্বল্প আয়ের পরিবারগুলো।
আজ রবিবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারি বাজার ঘুরে জানা যায়, পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজের কেজি প্রতি দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা অন্যদিকে খুচরা বাজারে বেড়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। চীন ও তুরস্কের বড় পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়, যা আগে ৬০ থেকে ৭০ টাকা ছিল।
পেঁয়াজের এই চড়া দামের একই পথে হাটছে রসুন। প্রতি কেজি দেশি রসুনের দাম এখন ২০০ টাকা। আর চীনা রসুন দাম ১৫০ টাকা। অথচ গেল কয়েক দিনে আগেও এ চীনা রসুনের দাম ছিল প্রতি কেজি ১৩০ টাকা। এদিকে চীনা আদাও কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর দেশিও নতুন আদা ১০০ টাকা থেকে এখন ১২০ টাকা হয়েছে।
সম্প্রতি বাজারে সয়াবিন তেলের দাম লিটার প্রতি ৮ টাকার মতো বেড়েছে এবং চিনির দামও বেড়েছে কেজি প্রতি ৭ টাকা। বাজারে শীতের সবজির দামও চড়া। তিন-চার দিন আগে যে ফুলকপি ৩০ টাকা ছিল এখন তা ৪০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। ৩০ টাকার আলুর কেজিও এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়। শিম, বেগুনের মতো মৌসুমি সবজির কেজিও ৫০ টাকার আশপাশে, যা আগের চেয়ে ১০ টাকা বাড়তি।
পুরান ঢাকার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মো. সামসুর রহমান জানান, গত কিছু দিন ধরে পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকায় শুক্রবার বিকাল থেকে বাজার চড়া হয়ে ওঠে। পৌষের মাসের গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর শৈত্যপ্রবাহের তীব্র শীতের কারণে কৃষক খেত থেকে পেঁয়াজ ওঠাতে পারেননি। এ জন্যই বাজারে পেঁয়াজ কম এসেছে। যার ফলে পণ্যটির দাম বেড়েছে। আগামী দুই-তিন দিনে মধ্যে দাম কমে যাবে।
তিনি জানান, পাইকারি বাজারে মুড়িকাটা জাতের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। আর আমদানি করা তুরস্কের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়, পাকিস্তানি পেঁয়াজ ১২৫ থেকে ১৩০ এবং চায়না ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আশরাফ আলী জানান, বৃষ্টির কারণেই কয়েক দিন ধরে দাম বাড়ছে পেঁয়াজের। আড়তে এখন পেঁয়াজ সরবরাহ কম। বাজারে পেঁয়াজের দাম কমই ছিল। তবে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে দাম আবারও কমে যাবে।
আনন্দবাজার/এম.কে